দক্ষিণ আফ্রিকায় পরপর দুই সপ্তাহান্তে সরাইখানায় গুলিবর্ষণের ঘটনায় ১৯ জন নিহত হওয়ার পর, বিভিন্ন সম্প্রদায় জিজ্ঞাসা করছে এর কী প্রতিকার আছে৷
জোহানেসবার্গের শহরতলী সোয়েটোতে, শত শত মানুষ এই সপ্তাহান্তে একটি সরাইখানায় ১৫ জনের নির্মম হত্যাকাণ্ডের অভিপ্রায় কী ছিল, তা বোঝার চেষ্টা করছে।
দক্ষিণ আফ্রিকায় বন্দুক সহিংসতার ঘটনা ঘটলেও, ব্যাপক হত্যার ঘটনা প্রায় বিরল।
টিম থেমা নামে সোয়েটোর স্থানীয় একজন নেতা বলেছেন, গত এক বছরে এই এলাকায় একাধিক মারাত্মক গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে।
তিনি বলেন, "সোয়েটোতে প্রত্যেকের কাছে একটি করে বন্দুক আছে। আপনি একজন বিদেশী নাগরিক হোন, কিংবা এই দেশের নাগরিক, সবার কাছেই বন্দুক থাকে এবং আপনি নিজেকে প্রশ্ন করতে পারেন, এটা কেমন দেশ? আমরা এমন সমাজে বাস করতে পারি না, যেখানে সবার কাছে বন্দুক আছে এবং তারা যা খুশি করতে পারে।"
এই সপ্তাহান্তের সহিংসতা বিচ্ছিন্ন কোনও ঘটনা ছিল না।
পূর্বাঞ্চলীয় কোয়াজুলু-নাটাল প্রদেশের শহর পিটারমারিটজবার্গে বন্দুকধারীদের গুলিতে আরও চারজন নিহত হয়েছে।
সেই গোলাগুলির ঘটনায় দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হলেও, সোয়েটো ট্র্যাজেডির হামলাকারীরা এখনও ধরা পড়েনি।
সরকারী কর্তৃপক্ষ বলেছে, ঘটনা দুটি পরস্পরের সাথে সম্পৃক্ত নয়।
দক্ষিণ আফ্রিকার পুলিশ মন্ত্রী ভেকি সেল সোমবার সোয়েটোতে শোকাহত বাসিন্দাদের সাথে দেখা করার সময় সাংবাদিকদের সাথে কথা বলছিলেন।
সেল বলেছেন, "আমরা বিশ্বাস করি না যে এটি কোনও সন্ত্রাসবাদের ঘটনা ছিল। একদল লোক এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত, এবং আমরা বিশ্বাস করি তাদের খুঁজে পাওয়ার পাশাপাশি হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্যও জানতে পারবো।"
তবে, সার্বিকভাবে দেশটিতে অপরাধ প্রবণতা বেড়েছে।
এই বছরের প্রথম তিন মাসেই ৬,০০০-এর বেশি খুনের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত পাঁচ বছরের মধ্যে যে কোনও ত্রৈমাসিক সময়ের জন্য এই হার সর্বোচ্চ।
অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ১৯৯০ এবং ২০০০ এর দশকের শুরুতে অবৈধ অস্ত্র বাজেয়াপ্ত ও ধ্বংস করার জন্য বন্দুক নিয়ন্ত্রণ অভিযানের ফলে সহিংসতা হ্রাস পেয়েছিল।
কিন্তু গত এক দশকে অগ্রগতির সেই চিত্র পাল্টে গেছে।
ভবিষ্যৎ আক্রমণের ভয়ে ভীত সোয়েটো বাসিন্দারা বলছেন, এর সমাধানগুলি সহসাই আসবে বলে মনে হয়না।