অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

জাতিসংঘের অধিকার সংস্থার সদস্য পদ লাভে ব্যর্থ হয়েছে আফগানিস্তান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং ভেনিজুয়েলা


ফিশ-আই লেন্সের মাধ্যমে তোলা জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের ওভারভিউ। ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২। (ফাইল ছবি)
ফিশ-আই লেন্সের মাধ্যমে তোলা জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের ওভারভিউ। ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২। (ফাইল ছবি)

আফগানিস্তান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং ভেনিজুয়েলা মঙ্গলবার জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে তিন বছরের মেয়াদের সদস্য পদের জন্য প্রার্থিতায় পরাস্ত হয়েছে।

জেনেভা ভিত্তিক ৪৭ জাতির অধিকার সংস্থার জন্য ভোট দেয় সাধারণ পরিষদের ১৯৩-সদস্য রাষ্ট্রের প্রায় সবাই। ভোটে আলজেরিয়া, বাংলাদেশ, বেলজিয়াম, চিলি, কোস্টারিকা, জর্জিয়া, জার্মানি,

কিরগিজস্তান, মালদ্বীপ, মরক্কো, রোমানিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, সুদান এবং ভিয়েতনাম জয়লাভ করে।

আঞ্চলিক দলের মাধ্যমে আসন বণ্টন করা হয়। আফ্রিকা, পূর্ব ইউরোপ, পশ্চিম ইউরোপ এবং অন্যান্য গোষ্ঠী সকলেই প্রার্থীদের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অংশ নিয়েছিল। তবে সমস্ত বিজয়ীদের এখনও কমপক্ষে ৯৭-ভোট পেয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে হবে।

প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা দেশগুলির মধ্যে, চিলি এবং কোস্টারিকা সহজেই ভেনেজুয়েলার পুনঃনির্বাচনের প্রার্থিতার পথ রুদ্ধ করে দিয়েছে। (দেশগুলি পরপর দুই মেয়াদে কাজ করতে পারে)। চিলি ১৪৪ ভোট পেয়ে জয়লভ করেছে , আর কোস্টারিকা পেয়েছে ১৩৪ ভোট। অন্যদিকে, ভেনেজুয়েলা মাত্র ৮৮ ভোট পেয়েছে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এর জাতিসংঘের পরিচালক লুই চারবোনিউ বলেছেন, "সাধারণ পরিষদ জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে থাকার জন্য ভেনিজুয়েলার প্রচেষ্টার দ্বার সঙ্গত কারণেই রুদ্ধ হয়ে গেছে।"

জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরের সেপ্টেম্বরের একটি প্রতিবেদনে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সামরিক ও গোয়েন্দা সংস্থার দ্বারা দমন-পীড়নের বিবরণ দিয়েছে। তদন্তকারীরা যা বলেছে তাতে গুরুতর অপরাধ এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ নির্যাতন ও যৌন সহিংসতা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

তবে, মাদুরো সরকার এই অভিযোগগুলোকে "মিথ্যা ও ভিত্তিহীন" বলে নাকচ করে দিয়েছে।

আফগানিস্তানও কাউন্সিলে যোগদানের জন্য তাদের আসন হারিয়েছে। দেশটি মাত্র ১২ ভোট পেয়েছে।

নারী, মেয়ে এবং সংখ্যালঘুদের প্রতি তালিবানের দুর্ব্যবহার এবং ব্যক্তিগত স্বাধীনতার ওপর তাদের ব্যাপক দমন-পীড়নের কারণে আফগানিস্তান আন্তর্জাতিক নিন্দার শিকার হয়েছে।

দেশটি প্রকৃতপক্ষে তালিবান নিয়ন্ত্রণে থাকলেও, জাতিসংঘের আসনটি এখনও পূর্ববর্তী সরকারের হাতে রয়েছে, কারণ কোনো দেশই এখন পর্যন্ত তালিবান নেতৃত্বকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়নি।

দক্ষিণ কোরিয়া ১২৩ ভোট পেয়েও পুনঃনির্বাচনের দৌড়ে হেরে গেছে। এই গ্রুপে ভিয়েতনাম সব চেয়ে বেশি ভোট পেয়ে অন্যান্য প্রার্থীদের পিছনে ফেলেছে, দেশটি পেয়েছে ১৪৫ ভোট।

তবে, এইচআরডাব্লিউ-এর চার্বোনিউ বলেছেন, "ভিয়েতনামের মতো আপত্তিজনক সরকারকে কাউন্সিলে নির্বাচিত করা শুধুমাত্র এর বিশ্বাসযোগ্যতাকে ক্ষুণ্ন করে।"

অধিকার গোষ্ঠীটি বলেছে, ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট পার্টির একদলীয় শাসন, পদ্ধতিগতভাবে মৌলিক নাগরিক এবং রাজনৈতিক অধিকারগুলিকে দমন করে। সরকারের সমালোচকরাও প্রায়ই পুলিশি হয়রানি, নির্বিচারে গ্রেপ্তার এবং জেল জুলুমের শিকার হন।

কাউন্সিলে যোগদানকারী দেশগুলি দেশে এবং বিদেশে "মানবাধিকারের প্রচার ও সুরক্ষার সর্বোচ্চ মান বজায় রাখবে" বলে আশা করা হচ্ছে।

সদস্যরা তিন বছরের জন্য কাজ করে এবং পরপর দুই মেয়াদে কাজ করার পর, পুনরায় নির্বাচনের জন্য আর যোগ্য হয় না। নতুন সদস্যরা আগামী ১ জানুয়ারী, ২০২৩ থেকে তাদের মেয়াদ শুরু করবে।

এই বছর, কাউন্সিল অসদাচরণের জন্য এক সদস্য রাষ্ট্রকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার বিরল পদক্ষেপ নিয়েছে।

গত ৭ এপ্রিল, এইচআরসি থেকে বহিষ্কার হওয়া দ্বিতীয় রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছিল রাশিয়া (মোয়াম্মার গাদ্দাফির লিবিয়া ছিল প্রথম দেশ)। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নৃশংসতার অভিযোগে, মস্কোর বিরুদ্ধে ভোট দেয় সাধারণ পরিষদ এবং দেশটিকে বহিষ্কার করে।

২০০৬ সালে অকার্যকর জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনকে ভেঙে দিয়ে তার জায়গায় মানবাধিকার কাউন্সিল প্রতিষ্ঠিত হয়।

XS
SM
MD
LG