জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার ভলকার তুয়ের্ক বলেছেন যে বিশ্বজুড়ে নারী অধিকার ও লিঙ্গ সমতার বিষয়টিকে উদ্দেশ্যমূলক ও পদ্ধতিগতভাবে বিরোধীতা করা হচ্ছে। তিনি এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে সতর্ক করেছেন।
ফ্রান্সের সংবাদ সংস্থা এএফপি’র সঙ্গে বুধবার এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তুয়ের্ক বলেন, সম্প্রতি নারীদের বিরুদ্ধে তিনি যে বিরূপ ও খারাপ আচরণে ফিরে যাওয়া দেখছেন , বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যা দেখা যাচ্ছে, তা নিয়ে তিনি খুবই উদ্বিগ্ন।
তিনি বলেন, “উদাহারণ হিসেবে বললে, আমরা সোশ্যাল মিডিয়াতে এ বিষয়ে যা দেখি, সেখানে নারীবিদ্বেষী, লিঙ্গবিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্যগুলো নানা উপায়ে সমর্থন পায় এবং জোরালো হয়; যা খুব উদ্বেগজনক।"
তুয়ের্ক আফগানিস্তান এবং ক্ষমতাসীন তালিবানকে “খারাপের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ” হিসেবে উল্লেখ করেছেন এবং নারীদের উপর তাদের নিপীড়নকে "তুলনা অযোগ্য" বলে অভিহিত করেন। গত মাসে তালিবান নারীদের বেসরকারি সংস্থায় কাজ করার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এর আগে তারা নারী ও মেয়েদের বিশ্ববিদ্যালয় ও মাধ্যমিক শিক্ষা গ্রহণের অনুমতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি থেকে সরে যায়।
মানবাধিকার প্রধান, আফগানিস্তানের নারী ও মেয়েদের সঙ্গে সর্বোচ্চ সংহতি প্রকাশ করতে আন্তজাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহবান জানান এবং বলেন, “আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে এমন আচরণ ভবিষ্যতের জন্য যেন আদর্শ বা সাধারণ নিয়মে পরিণত না হয়।“
তুয়ের্ক ইরান সফর করার চেষ্টা করেছেন। ২২ বছর বয়সী মাহসা আমিনি নারীদের জন্য দেশটির কঠোর পোষাক বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে নৈতিকতা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন, পরে তাদের হেফাজতে মারা যান। এরপর সেপ্টেম্বর থেকে দেশটিতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। তুয়ের্ক বলেন, ইরানি কর্তৃপক্ষ এখনো তার অনুরোধে সাড়া দেয়নি।
তুয়ের্ক বলেন, যদি তাকে যেতে দেওয়া হয়, তবে তিনি আবারও “নারী ও মেয়েদের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক আচরণ” বাতিল করার আহ্বান জানাবেন এবং বিক্ষোভের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষের নিষ্ঠুর দমন-পীড়নের বিষয়টি উত্থাপন করবেন। তিনি বিক্ষোভের সাথে সম্পর্কিত মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার বিষয়ে বিশেষ উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, “এ ধরনের প্রেক্ষাপটে কোনো অবস্থাতেই মৃত্যুদণ্ড দেওয়া উচিত নয়।“
অসলো-ভিত্তিক সংস্থা ইরান হিউম্যান রাইটস বলছে, এই দমন অভিযানে অন্তত ৫০০ জন নিহত হয়েছে এবং হাজার হাজার লোককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এই প্রতিবেদনের কিছু তথ্য এএফপি থেকে নেয়া।