তুরস্ক ও সিরিয়ায় ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্পের ৫ দিন পরও, উদ্ধার-কর্মীরা জীবিত অবস্থায় অনেক মানুষকে উদ্ধার করছেন। নিকটবর্তী এলাকায় লুটপাটের খবর পাওয়া গেলে, তুরস্কের কিছু স্থানে উদ্ধার কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভূমিকম্পে ২৮ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন এবং গৃহহীন হয়েছেন আরও লাখ লাখ মানুষ। জাতিসংঘের ত্রাণ বিষয়ক কার্যক্রমের প্রধান মার্টিন গ্রিফিথস আশংকা প্রকাশ করেন যে মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ হতে পারে। সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের পরিস্থিতি সবচেয়ে করুণ।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিজেপ তাইয়েপ এরদোয়ান শনিবার এই ভূমিকম্পকে “শতাব্দীর ভয়াবহতম দুর্যোগ” হিসেবে অভিহিত করেন। তুরস্কে অসংখ্য ভবন ধসে পড়ে, আবর্জনার বিশাল স্তুপ তৈরি হয়েছে। এর মাধ্যেই চলছে উদ্ধার কার্যক্রম। তুরস্ক শনিবার ঠিকাদারদের গ্রেপ্তার শুরু করেছে।কর্মকর্তাদের বিশ্বাস, ভূমিকম্পের সময় এবং পরে যেসব ভবন ধসে পড়েছে, সেগুলোর দুর্বল অবকাঠামোর জন্য এই ঠিকাদাররা দায়ী।
ইউনিভার্সিটি কলেজ, লন্ডন-এর জরুরী পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক ডেভিড আলেকজান্ডার দ্য এসোসিয়েটেড প্রেসকে বলেন, “এই দুর্যোগ নিম্নমানের নির্মাণের জন্য হয়েছে, ভূমিকম্পের কারণে নয়”।
তুরস্কের স্থপতি-চেম্বারের প্রেসিডেন্ট এইয়ুপ মুহকু এপিকে জানান, যেসব ভবন ধসে পড়েছে, তার অনেকগুলোই তুরস্কের নির্মাণ নীতিমালাকে উপেক্ষা করে নিম্নমানের উপাদান ও প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্মাণ করা হয়েছে।
নর্থওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও ভূকম্পবিদ সুজান ফন ডার লী ভয়েস অফ আমেরিকার তুরস্ক শাখার ওজলেম টিনাজকে বলেন, “এ ধরনের ভূমিকম্প হবেই…আমরা শুধু জানি না কখন হবে। সুতরাং, সবচেয়ে ভালো কাজ হবে যতটুকু সম্ভব প্রস্তুত থাকা, ভবনগুলোকে যতখানি সম্ভব নিরাপদভাবে নির্মাণ করা এবং পায়ের নিচে মাটি কাঁপতে শুরু করলে কী করতে হবে, তা সুনির্দিষ্টভাবে জেনে রাখা”।