স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র ও বোমায় সজ্জিত একদল জঙ্গি পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় শহর করাচিতে অবস্থিত পুলিশ সদর দপ্তরে হামলা চালায়। শুক্রবার সন্ধ্যায় চালানো এই হামলার পর, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে ১ ঘণ্টার তুমুল বন্দুকযুদ্ধ হয়। এ ঘটনায় অন্তত ৪ জন নিহত হয়েছেন।
পাকিস্তানি তালিবান নামে পরিচিত, নিষিদ্ধ ঘোষিত তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। তারা জানায়, এটি ছিলো একটি ‘আত্মঘাতী অভিযান’। পরবর্তীতে এ বিষয়ে আরো বিস্তারিত জানানো হবে বলেও জানায় তারা।
প্রাদেশিক সরকারের মুখপাত্র জানান, মৃতদের মধ্যে রয়েছে পুলিশের ৩ সদস্য ও আধা-সামরিক বাহিনীর ১জন সৈনিক। মুর্তাজা ওয়াহাব সিদ্দিকী এক টুইটার বার্তায় জানান, ১৯ জন আহত হয়েছেন এবং তাদের মধ্যে ১ জনের অবস্থা আশংকাজনক।
পুলিশের কর্মকর্তারা জানান, বহুতল বিশিষ্ট এই পুলিশ ভবনে ঢুকে পড়ার আগে, ৮ থেকে ১০ জন হামলাকারীর একটি দল, মোটর গাড়িতে করে এসে, মূল ফটকে কয়েকটি গ্রেনেড ছুঁড়ে। পাকিস্তান পিপলস পার্টির জ্যেষ্ঠ নেতা ওয়াহাব সিদ্দিকী জানান, এরপর ২ পক্ষের সংঘাতে ৩ হামলাকারী নিহত হলে হামলার অবসান হয়। তবে, তাৎক্ষণিকভাবে বাকি হামলাকারীদের ভাগ্যে কী ঘটেছে, তা জানা যায়নি।
একাধিক নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে, হামলাকারীদের মধ্যে অন্তত একজন আত্মঘাতী বোমাহামলাকারী ছিলেন, যিনি সংঘর্ষের সময় বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিজেকে উড়িয়ে দিয়েছেন।
নগর পুলিশের জেষ্ঠ্য কর্মকর্তা ইরফান বালোচ সংবাদদাতাদের জানান, এই হামলা ঠেকাতে পুলিশ ও আধা-সামরিক বাহিনীর সদস্যরা যৌথভাবে কাজ করেছেন। তারা হামলাকারীদের খোঁজে, ভবনের প্রতিটি তলায় সন্ধান চালান।
টিটিপিকে যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে পাকিস্তানে এই গোষ্ঠীটি প্রায় প্রতিদিনই বোমা ও বন্দুক হামলা চালাচ্ছে। এতে শত শত মানুষ হতাহত হচ্ছেন, যাদের বেশিরভাগই নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য।
পাকিস্তানি তালিবান প্রতিবেশী দেশ আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন তালিবান গোষ্ঠীর শাখা এবং ঘনিষ্ঠ মিত্র। পাকিস্তানের অভিযোগ, টিটিপির পলাতক নেতা ও কমান্ডাররা সীমান্তের ওপারে আফগানিস্তানে অবস্থিত ঘাঁটিতে বসে, পাকিস্তানে জঙ্গি হামলা পরিচালনা করছেন।
কাবুলের তালিবান শাসকরা ইসলামাবাদের এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন। তারা জানান, টিটিপিসহ কোনো গ্রুপকে আফগানিস্তানের ভূখণ্ড ব্যবহার করে আন্তঃসীমান্ত হামলা চালাতে দেওয়া হচ্ছে না।