তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিজেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান চেষ্টা করছেন দামেস্কের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে। আর, তার প্রতিদ্বন্দ্বী কামাল কিলিচদারোগলু অঙ্গীকার করেছেন যে তিনি সিরিয়া থেকে আসা শরণার্থীদের তাদের যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে ফিরিয়ে দেবেন। এমন পরিস্থিতির মধ্যে তুরস্কের সিরীয়রা, দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফিরতি পর্বের দিকে নিবিড়ভাবে নজর রাখছে।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রথম রাউন্ডে এরদোয়ান ৪৯.৫২ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। আর কিলিচদারোগলু পেয়েছেন ৪৪.৮৮ শতাংশ ভোট। যেহেতু কোনো প্রার্থীই ৫০ শতাংশ ভোটের সীমা অতিক্রম করেননি, তাই তারা ২৮ শে মে ফিরতি-নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
৩৩ বছর বয়সী আলী আল মোহাম্মদ ২০১৪ সালে দামেস্ক ছেড়ে যান।আর, ২০১৮ সালে তুরস্কের নাগরিকত্ব পান। এই ব্যক্তি বলেন, নির্বাচনের ফলাফলে তিনি খুশি নন; তবে এখন তিনি স্বস্তি বোধ করছেন। তিনি বিরোধীদের সম্ভাব্য জয় নিয়ে শংকাবোধ করছিলেন। মোহাম্মদ এবং আরো অনেকে সম্ভাব্য প্রতিশোধের ভয়ে ছদ্মনাম ব্যবহার করে ভয়েস অফ আমেরিকার সাথে কথা বলেছেন।
ভয়েস অফ আমেরিকাকে মোহাম্মদ বলেন, "আমরা (তুরস্কে সিরীয়রা) সবাই একটা স্থায়ী ভয়ের মধ্যে বাস করছি। যেমন, কি ঘটতে যাচ্ছে? কে জিতবে? আর যদি বিরোধীদল জিতে যায়, তাহলে আমাদের কী হবে? আমাদের কি বের করে দেয়া হবে?”
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার মতে, তুরস্ক বিশ্বের বৃহত্তম শরণার্থী জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়েছে। এদের মধ্যে "প্রায় ৩৬ লাখ সিরীয় অস্থায়ী সুরক্ষার অধীনে রয়েছে। আর, প্রায় ৩ লাখ ৭০ হাজার অন্যান্য জাতির আশ্রয়প্রার্থী ও শরণার্থী রয়েছে দেশটিতে।”
রিপাবলিকান পিপলস পার্টিসহ ছয়টি বিরোধী দলের সমন্বয়ে গঠিত নেশন অ্যালায়েন্সের প্রার্থী কিলিচদারোগলু তার নির্বাচনী প্রচারণার সময় প্রতিশ্রুতি দেন যে, নির্বাচিত হলে দুই বছরের মধ্যে স্বেচ্ছায় তুরস্কে সিরীয় শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেবেন। তিনি তুরস্ক ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে ২০১৬ সালের অভিবাসন চুক্তি পুনর্বিবেচনা করবেন বলেও জানান। এই চুক্তির আওতায় ব্রাসেলস ইউরোপীয় ইউনিয়নের মাটিতে শরণার্থী প্রবেশ রোধে আঙ্কারাকে ৬০০ কোটি ইউরো দিতে সম্মত হয়েছে।
অন্যদিকে ক্ষমতাসীন জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির (একেপি) প্রধান এরদোয়ান সিরিয়ার শরণার্থীদের বিতাড়িত না করার অঙ্গীকার করেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, আঙ্কারা তাদের স্বেচ্ছায় প্রত্যাবর্তনে সক্ষম করে তুলতে উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ায় কয়েক হাজার আবাসন ইউনিট তৈরি করেছে।
তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুলেমান সোয়লু মঙ্গলবার ঘোষণা করেন, ৫লাখ ৫৩,৩৩৫ জন সিরীয় নিরাপদ অঞ্চলে ফিরে গেছেন। তুরক্কের সমর্থনপুষ্ট বিরোধী সিরীয়দের দখলে থাকা এলাকাকে তিনি নিরাপদ এলাকা বলে উল্লেখ করেন।