তিনি আরো বলেন, “বর্তমান সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য মাত্র কয়েকদিন আগে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা খুব উত্তেজনায় কাঁপছিলেন। কিন্তু এখন তাদের উত্তেজনা কমতে শুরু করেছে। তাদের সুর নেমে এসেছে। তারা এখন বলছেন, আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে হবে, কারণ তারা অশান্তি চান না।”
এর আগে রবিবার (২৮ মে) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকার আর কোনো অস্থিরতা ও সংঘাত চায় না; বরং জনগণের জীবনমান উন্নত করতে চায়।
মির্জা ফখরুল বলেন, “সরকার বিরোধী দলের বিভিন্ন শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলা চালিয়ে সহিংসতার উস্কানি দিচ্ছে। তবে, আমরা (বিএনপি) তাদের কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছি না।” তিনি বলেন, “বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে যে আন্দোলন করে আসছে তা চূড়ান্ত পর্যায়ে এসেছে।”
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আপনাকে (প্রধানমন্ত্রী) অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে, কারণ দেশের জনগণ আপনাকে ক্ষমতায় রেখে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে বলে মনে করে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে।”
এদিকে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, “বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ঘোষিত নতুন ভিসা নীতির কারণে বিএনপির নির্বাচন বয়কটের ষড়যন্ত্র নস্যাৎ হয়েছে।” সোমবার (২৯ মে) এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলে
বিবৃতিতে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “ব্লুপ্রিন্ট অনুযায়ী বিদেশিদের কাছ থেকে সাড়া না পেয়ে, বিএনপি এখন গভীর অবসাদে নিমজ্জিত। তাই বিএনপি আন্দোলনের পথ হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিলে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক বলে গণ্য হবে না, যা গণতন্ত্রের অন্তর্নিহিত আদর্শের পরিপন্থী; বিএনপি’র এমন প্রচারণা ভেস্তে গেছে।” ওবায়দুল কাদের বলেন, “ নতুন ভিসা নীতিতে নির্বাচন বানচাল করতে বিএনপির অগ্নিসংযোগ ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে।”
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, “বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জনগণের কল্যাণের জন্য রাজনীতি করে। জনগণই আওয়ামী লীগের মূল শক্তি।” তিনি বলেন, “জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন বিএনপি নেতারা যতই চেষ্টা করুক না কেন, এদেশের মানুষ তাদের অপপ্রচার ও মিথ্যাচারে বিভ্রান্ত হবে না। কারণ, বাংলাদেশের জনগণ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ; যিনি উন্নয়ন, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির প্রতীক।”
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেনের ঘোষণা: বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধা দিলে ভিসা দেবে না যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনের লক্ষ্যে ভিসা নীতির ঘোষণা দিতে গিয়ে এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেন, “আমি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশের লক্ষ্যকে সমর্থন করা্র উদ্দেশ্যে অভিবাসন ও জাতীয়তা আইনের ২১২ (এ) (৩) (সি) (‘৩সি’) ধারার অধীনে একটি নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করছি। এই নীতির অধীনে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে মনে করা যেকোনো বাংলাদেশি ব্যক্তির জন্য ভিসা প্রদান সীমিত করবে। এর মধ্যে বর্তমান ও প্রাক্তন বাংলাদেশি কর্মকর্তা, সরকার সমর্থক ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্য এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, বিচার বিভাগ এবং নিরাপত্তা পরিষেবার সদস্যরা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র মে মাসের ৩ তারিখে বাংলাদেশ সরকারকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে”।
তিনি আরো বলেছেন, “গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে দুর্বল করে এমন কর্মের মধ্যে রয়েছে ভোট কারচুপি, ভোটারদের ভয় দেখানো, সহিংসতার ব্যবহার, জনগণকে তাদের সংগঠনের স্বাধীনতা এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার প্রয়োগ করা থেকে বিরত রাখা এবং রাজনৈতিক দল, ভোটার, সুশীল সমাজ, বা মিডিয়াকে তাদের মতামত প্রচার থেকে প্রতিরোধ করার লক্ষ্যে যেকোনো রকম ব্যবস্থার ব্যবহার”।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, “অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব সকলের- ভোটার, রাজনৈতিক দল, সরকার, নিরাপত্তা বাহিনী, সুশীল সমাজ এবং মিডিয়ার। বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে যারা চায়, তাদের সকলকে আমাদের সমর্থন দিতে আমি এই নীতি ঘোষণা করছি।”