অর্থনীতির উন্নয়ন ও বহির্বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানোর প্রত্যাশায় ইরান এ বছর তাদের কূটনীতিক তৎপরতা বাড়িয়েছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী লাতিন আমেরিকা সফর করেছেন, সাবেক প্রতিদ্বন্দ্বী সৌদি আরবের কূটনীতিকদের নিজ দেশে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন এবং পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরোক্ষ আলোচনায় অংশ নিয়েছেন।
বলা যায়, এসব উদ্যোগ সফল হয়েছে। এই সপ্তাহান্তে ইরান আনুষ্ঠানিকভাবে সাংহাই কোঅপারেটিভ অরগানাইজেশনে (এসসিও) যোগ দিয়েছে।
শুক্রবার মস্কোয় এসসিওর একটি কেন্দ্র উদ্বোধনের সময় রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেন, “৪ জুলাই রাষ্ট্রপ্রধানদের বৈঠকে ইরানের পূর্ণ সদস্যপদের বিষয়টি অনুমোদন পাবে।”
জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রভাষক মোহাম্মদ ঘায়েদি চীনের মতো নব্য ক্ষমতাধর রাষ্ট্র ও যেসব সংস্থা এসব রাষ্ট্রের স্বার্থ নিয়ে কাজ করে, সেগুলোর গুরুত্ব উল্লেখ করে বলেন, “ইরান এসব সংস্থার সক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে তাদের নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক স্বার্থ পূরণের চেষ্টা চালাচ্ছে।”
ঘায়েদি ভয়েস অফ আমেরিকার ফার্সি বিভাগকে জানান, এসসিওতে যোগদানের মাধ্যমে ইরান যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা বিধিনিষেধের প্রভাব কমানোর আশা করছে। বস্তুত তারা পশ্চিমকে আঞ্চলিক ক্ষমতাধর রাষ্ট্র দিয়ে প্রতিস্থাপন করতে চাইছে এবং তুরস্ক ও সৌদি আরবের সঙ্গে দর কষাকষিতে বাড়তি সুবিধা আদায় করতে চাইছে। এ দুটি দেশও সাংহাই জোটে যোগ দিতে আগ্রহী।
২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এসসিও। এটি একটি রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও প্রতিরক্ষা সংস্থা, যার ৮ সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে আছে চীন, রাশিয়া, ভারত ও পাকিস্তান। বর্তমানে ইরান এই ইউরেশীয় জোটে পর্যবেক্ষকের ভূমিকায় রয়েছে।
ইরানের পরবর্তী লক্ষ্য হচ্ছে অপর একটি জোট ব্রিক্স’এ অন্তর্ভুক্ত হওয়া, যেটিতে পশ্চিমা দেশদের বাদ রাখা হয়েছে। ব্রিকস গ্রুপের সদস্যরা হল ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা।