জাতিসংঘ বলছে, আফগানিস্তানে তালিবান কর্তৃপক্ষ নারীদের কাজ ও শিক্ষার প্রবেশাধিকারের ওপর বিধিনিষেধ বাড়ানোর পাশাপাশি বিরোধী বাহিনী ও সাংবাদিক সন্দেহে নির্বিচারে গ্রেপ্তার ও আটক অব্যাহত রেখেছে।
আফগানিস্তানে জাতিসংঘের সহায়তা মিশন বা ইউএনএএমএ সোমবার প্রকাশিত একটি নতুন প্রতিবেদনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ নথিভুক্ত করেছে।
তালিবানের প্রধান মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ দাবি করেছেন, এটি প্রাক্তন আফগান সরকারের অনুগতদের দ্বারা প্রচারিত "মিথ্যা তথ্যের" উপর ভিত্তি করে করা।
মে মাসের শুরুতে তালিবানের জনস্বাস্থ্য মন্ত্রকের এক নির্দেশনার উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, শুধুমাত্র পুরুষরা বিশেষায়িত মেডিকেল পড়াশোনা করতে এবং পরীক্ষা দিতে পারবে।
তালিবান গত ডিসেম্বর থেকে ষষ্ঠ শ্রেণির পরে কিশোরীদের স্কুলে যাওয়া নিষিদ্ধ করে এবং ছাত্রীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসে অংশ নিতে বাধা দেয়।
ইউএনএএমএ'র প্রতিবেদনে বলা হয়, “১ মে একটি বিমানবন্দরে একটি আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থার দুই আফগান নারী কর্মীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে, কারণ তারা কোনো মাহরাম (পুরুষ অভিভাবক) ছাড়াই ভ্রমণ করছিলেন।”
ইউএনএএমএ জানায়, গত জুনে তালিবানের গোয়েন্দা সংস্থা এক ধাত্রীকে আটক করে পাঁচ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ চালিয়ে যাওয়ায় তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়।
রিপোর্টে আরও বলা হয়য়, “জাতিসংঘে কাজ করা আফগান নারীদের উপর কঠোর বিধিনিষেধ সংস্থাটির কাজকে প্রভাবিত করে চলেছে। সীমিত ব্যতিক্রম ছাড়া, ২০২৩ সালের ৫ এপ্রিল থেকে ইউএনএএমএ'র সকল আফগান কর্মী- নারী ও পুরুষ- কর্মক্ষেত্রে বৈষম্যমূলক আচরণ রোধে বাসা থেকে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।”
তালিবান নারীদের পাবলিক পার্ক, জিম এবং পাবলিক বাথহাউসে যেতে নিষেধ করেছে। শরিয়াহ বা ইসলামী আইনের অধীনে নিষিদ্ধ সেবা প্রদানের অভিযোগে সম্প্রতি দরিদ্র দেশজুড়ে শত শত নারী পরিচালিত বিউটি পার্লার এক মাসের মধ্যে বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে তাদের অপব্যবহার প্রতিরোধ মন্ত্রক।
বিউটি সেলুনের মালিক ও কর্মচারীদের মতে, এই পদক্ষেপের ফলে হাজার হাজার আফগান নারী বেকার হয়ে পড়েছেন।
মুজাহিদ বলেন, “ইতিবাচক পরিস্থিতিতে জাতিসংঘের কাছে তারা এ ধরনের নেতিবাচক প্রতিবেদন প্রকাশ বন্ধের দাবি জানাচ্ছে।”