ভারতের রিজার্ভ ব্যাঙ্কের অনুমানকে ছাপিয়ে গিয়ে মুদ্রাস্ফীতির হার ৭.৪৪ শতাংশে পৌঁছে গেল। বিশেষজ্ঞদের মতে গত জুলাই মাসে ভারতের উপভোক্তা মূল্য সূচক যে হারে বাড়ল তাতে কেন্দ্রের মোদী সরকারের চিন্তিত হয়ে পড়াই স্বাভাবিক। আগামী বছর ২০২৪-এ দেশে লোকসভা নির্বাচন, তাই ভোট বছরে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি পরিস্থিতি এমন থাকলে তা মোটেই ভাল খবর নয় বলেই মনে করছেন তারা। হিসাব মতো গত ৯ মাসে এই প্রথম মূদ্রাস্ফীতির হার এতটা বেড়ে গেল। গত জুন মাসে মুদ্রাস্ফীতির হার ছিল ৪.৮৭ শতাংশ।
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মতে, মুদ্রাস্ফীতির হার ৬ শতাংশের মধ্যে থাকলে তা সহনশীল বলে ধরে নিতে হবে। কিন্তু সোমবার ১৪ অগাস্ট সরকার যে পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে তাতে পরিষ্কার যে বিষয়টা সহনশীলতার সীমা ছাড়িয়ে অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। আরও উদ্বেগের বিষয় হল, উপভোক্তা খাদ্য মূল্য সূচক জুলাই মাসে পৌঁছে গিয়েছে ১১.৫১ শতাংশে। ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে কোভিড কালে ঠিক এই হারে খাদ্য মূল্য সূচক বেড়েছিল। তার পর থেকে এতটা আর বাড়েনি। এর অর্থ হল, খাবার দাবারের জন্য দেশের মানুষকে এখন আগের তুলনায় অনেক বেশি টাকা খরচ করতে হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের কারও কারও মতে, খাবারের দাম সামান্য বাড়লে মুদ্রস্ফীতি তথা উপভোক্তা মূল্য সূচকের উপর বড় প্রভাব পড়ে। এক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। শাক-সবজি, ধান, গম, দুধ সবের দামই বেড়েছে। কিন্তু দাম বাড়লেই মানুষ তা কেনা কমিয়ে দিয়েছে তা নয়। অনেককেই হিসাবের বাইরে গিয়ে খরচ করতে হচ্ছে। তার ফলে মধ্যবিত্তর সংসারের বাজেট তথা হিসাব অনেকাংশেই সমস্যায় পড়েছে।
পরিস্থিতি যে এমনটা হতে চলেছে তার ইঙ্গিত সম্প্রতি একটি সমীক্ষায় পাওয়া গিয়েছিল। ৫৩ জন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদকে নিয়ে সংবাদসংস্থা রয়টার্স একটি সমীক্ষা করেছিল। তাতে বলা হয়েছিল জুলাই মাসে মুদ্রাস্ফীতি ৬.৪০ শতাংশে পৌঁছে যাবে। ফলে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক যে সীমার মধ্যে মুদ্রাস্ফীতির হার ধরে রাখার কথা বলছে, তা হবে না। এদিন সরকার পরিসংখ্যান প্রকাশ করতে দেখা গেল তাদের আশঙ্কাই সত্যি বলে প্রমাণিত হয়েছে।