অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ভারতের বিহারে সামনে এল রাজ্যপাল-রাজ্য সরকার বিরোধ, বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগের ক্ষমতা রাজ্যপালের থেকে কেড়ে নিলেন মুখ্যমন্ত্রী


ভারতের বিহারে সামনে এল রাজ্যপাল-রাজ্য সরকার বিরোধ, বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগের ক্ষমতা রাজ্যপালের থেকে কেড়ে নিলেন মুখ্যমন্ত্রী
ভারতের বিহারে সামনে এল রাজ্যপাল-রাজ্য সরকার বিরোধ, বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগের ক্ষমতা রাজ্যপালের থেকে কেড়ে নিলেন মুখ্যমন্ত্রী

ভারতের অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির মধ্যে অন্যতম বিহারব উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজভবন অর্থাৎ কেন্দ্র মনোনীত রাজ্যপালের মধ্যে বিবাদ শুরু হয়েছে। বিহারের রাজ্যপাল রাজ্যন্দ্র বিশ্বনাথ আরলেকর বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে রাজ্য সরকারের নির্দেশে হস্তক্ষেপ করছেন বলে রাজ্যের শাসক জোটের অভিযোগ। পাল্টা হিসাবে বুধবার নীতীশ কুমারের সরকার আচার্য – রাজ্যপালের হাত থেকে উপাচার্য নিয়োগের অধিকার কেড়ে নিয়েছে।

রাজ্যের সাতটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ করতে চেয়ে বুধবার ২৩ অগাস্ট প্রথম শ্রেণির খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন দিয়েছে রাজ্য সরকার। বলা হয়েছে, ৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আবেদনপত্র জমা করতে। রাজ্য সরকারের সার্চ কমিটি উপাচার্য বাছাই করবে।

ওই সাত বিশ্ববিদ্যালয় পাটনা, জয়প্রকাশ নারায়ণ, বি আর আম্বেদকর বিহার, এলএন মিথিলা, সংস্কৃত, বিএন মণ্ডল এবং আর্য্য ভট্ট-র জন্য ইতিমধ্যেই উপাচার্য নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল রাজভবন। রাজ্য সরকারের বিজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, উপাচার্য নিয়োগের অধিকার রাজ্য সরকারের হাতে ন্যস্ত।
যদিও বিহারের শিক্ষা মহলের বক্তব্য, রাজ্যপালই আচার্য হিসাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ করে আসছেন। এই প্রথম সেই ক্ষমতা রাজ্য সরকার কেড়ে নিল।
নীতীশ সরকারের অভিযোগ, এর আগে রাজ্যপাল একেবারে উচ্চশিক্ষা দফতরের দৈনন্দিন কাজে হস্তক্ষেপ করেছেন। তাই উপাচার্য নিয়োগের দায়িত্ থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হল।

চলতি বিরোধের সূত্রপাত বাবাসাহেব ভীমরাও আম্বেদকর বিহার বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘিরে। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং একজন প্রশাসনিক আধিকারিকের বেতন রাজ্য সরকার বন্ধ করে দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের যে অ্যাকাউন্ট থেকে তাদের বেতন দেওয়া হত, উচ্চ শিক্ষা দফতর নির্দেশ জারি করে সেটি ‘ফ্রিজ’ বা অচল করে দেয়। রাজ্য সরকারের অভিযোগ, নির্দেশ মতো উপাচার্য এবং ওই অফিসার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্ত কলেজগুলি পরিদর্শন করে রিপোর্ট দেননি। পরিদর্শন নিয়ে রাজ্য সরকারের রাজ্য ভিত্তিক পর্যালোচনা বৈঠকেও বিনা নোটিসে গরহাজির ছিলেন দু’জন।

কিন্তু রাজ্যপালের সচিব ব্যাঙ্ককে চিঠি দিয়ে ওই দুটি অ্যাকাউন্ট ফের চালু করার নির্দেশ দেন। চিঠিতে রাজ্যপালের ইচ্ছার কথা জানিয়ে তার সচিব লিখেছেন, "বিহার বিশ্ববিদ্যালয় আইনে রাজ্য সরকারের টাকা খরচের ব্যাপারে অডিট করতে পারে। কিন্তু ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করতে পারে না।"

রাজভবনের এমন চিঠি ঘিরে তুমুল বিতর্ক দেখা দিয়েছে। প্রশাসনিক মহলের বক্তব্য, আর্থিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় আইনের কোনও সম্পর্ক নেই। সংশ্লিষ্ট উপাচার্য এবং প্রশাসনিক আধিকারিক বিহার হায়ার এডুকেশন সার্ভিসের পদস্থ অফিসার। রাজ্য সরকার তাদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের ঘটনায় ব্যবস্থা নিতেই পারে। নির্দেশ বেআইনি হয়ে থাকলে আধিকারিকেরা আদালতে যেতে পারেন। এমনকী সরকারের কাছেও নিজেদের বক্তব্য পেশ করতে পারতেন। কিন্তু রাজ্যপাল কীভাবে হস্তক্ষেপ করতে পারেন, তার ব্যাখ্যা মিলছে না।

তবে নীতীশ সরকার এই বিষয়ে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে সাবধান করে দিয়েছে। রাজ্য সরকারের বক্তব্য, অ্যাকাউন্ট রাজ্য সরকারের। বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সরকারের লেনদেনের উদ্দেশে অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। একমাত্র রাজ্য সরকার বললে তবেই অ্যাকাউন্ট চালু করা যেতে পারে। তাছাড়া, ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ রাজভবনের কথায় ব্যাঙ্কের নিয়মের বাইরে যেতে পারে না।

এখন আচার্য রাজ্যপালের হাত থেকে উপাচার্য নিয়োগের ক্ষমতা কেড়ে নেওয়ার বিতর্ক নতুন দিকে মোড় নিতে চলছে। রাজভবন এরপর কী পদক্ষেপ করে সেটাই দেখার।

XS
SM
MD
LG