অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ভারতের স্কুলে মুসলিম সহপাঠীকে চড় মারতে শিক্ষিকার নির্দেশ, ভাইরাল হলো ভিডিও


ফাইল - ভারতের ঘোড়ামারা দ্বীপে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্ররা বই পড়ছে। ১৬ নভেম্বর, ২০১৮।
ফাইল - ভারতের ঘোড়ামারা দ্বীপে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্ররা বই পড়ছে। ১৬ নভেম্বর, ২০১৮।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা একটি ভিডিও ক্লিপে দেখা গেছে যে, একটি বেসরকারি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকা সাত বছরের এক মুসলিম ছাত্রকে চড় মারতে বাকি ছাত্রদের নির্দেশ দিচ্ছেন। এই ভিডিও ভারতে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি করেছে।

উত্তরপ্রদেশের নেহা পাবলিক স্কুলের শ্রেণিকক্ষে বৃহস্পতিবার তোলা এই ক্লিপে যে শিক্ষিকাকে দেখা গেছে তার নাম তৃপ্তা ত্যাগী। তিনি ওই দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়াকে মারতে ছাত্রদের নির্দেশ দিয়েছেন। দৃশ্যত এর কারণ, সে নামতা মুখস্থ করতে পারেনি। এই ক্লিপে শিশুটিকে কাঁদতে দেখা যাচ্ছে। আর অন্য শিশুরা তাকে পালা করে চড় মারছে।

৬০ বছর বয়সী এই হিন্দু শিক্ষিকার কর্মকাণ্ড ব্যাপক নিন্দার মুখে পড়েছে। এর প্রধান কারণ হল, ভিডিওতে তাকে যে কথাগুলি বলতে শোনা গেছে তা অনেকের মতে, মুসলিমদের নিশানা করেই বলা হয়েছে এবং ইসলামোফোবিয়ায় পূর্ণ।

ত্যাগীকে ভিডিওতে বলতে দেখা যাচ্ছে যে, তিনি "ঘোষণা করছেন, সমস্ত মোহামেডান (মুসলিম) ছাত্রদের মেরে বাড়িতে ফেরত পাঠানো উচিত..."

এই বিদ্যালয়ের যিনি প্রধান শিক্ষক, তাকেও অন্য এক ছাত্রকে বলতে শোনা গেছে, “ওকে এত আস্তে চড় মারছ কেন? ওকে আরও জোরে চড় মারতে পারো না?” একটা সময় ওই শিক্ষিকা বলেন, "ওর মুখ লাল হয়ে গেছে। এবার ওর কোমরে মারো।"

নিগৃহীতের বাবার এক তুতোভাই গোপনে এই ভিডিওটি তোলেন। এটি ইন্টারনেটে সমাজকর্মী, শিশু অধিকার বিষয়ক প্রচারকারী ও অন্যান্যদের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায়। অনেকেই এই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি তুলেছেন। এক্স (ট্যুইটার)-এ হ্যাশট্যাগ ‘অ্যারেস্ট তৃপ্তা ত্যাগী’ ট্রেন্ডিং হতে শুরু করে। জহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়ারা ত্যাগীর কুশপুত্তলিকা দাহ করেন এবং তার গ্রেফতারির দাবি তোলেন।

মুজফফরনগরের পুলিশ প্রধান সত্যনারায়ণ প্রজাপত বলেন, ওই শিশুর অভিভাবকরা পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন এবং ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি যাচাই করা হয়েছে।

প্রজাপত আরও বলেন, "এই ভিডিওতে (ত্যাগীর করা) অশালীন মন্তব্য রয়েছে। এই ঘটনার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।"

দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অপূর্বানন্দ বলেন, ভারতের স্কুলে মুসলিম শিশুরা "বহু প্রজন্ম ধরে বৈষম্যের শিকার", তবে ২০১৪ সাল থেকে এই অবস্থার "আরও অবনতি হয়েছে"।

ভিওএ-কে তিনি বলেন, "এখন মুসলিম-বিরোধী বৈষম্যমূলক সহিংসতাকে সমাজ উপভোগ করে ও একে যৌক্তিক প্রমাণ করে।"

XS
SM
MD
LG