পাকিস্তানের একটি বিশেষ আদালত বুধবার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের রিমান্ডের মেয়াদ ২ সপ্তাহ বাড়িয়েছে। প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন সময় তার কার্যালয় থেকে একটি গোপন কূটনৈতিক নথি কথিত হারিয়ে যাবার বিষয়ে তদন্তের জন্য এই সময় নেওয়া হয়েছে।
এর আগে রাষ্ট্রীয় উপহার সামগ্রী বিক্রি করা এবং এ থেকে প্রাপ্ত অর্থের বিষয়টি গোপন রাখার অভিযোগে ৩ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন ইমরান। ৫ আগস্ট থেকে তিনি আটক জেলে এই কারাদণ্ড ভোগ করছেন। ইসলামাবাদের পশ্চিমে অবস্থিত এই কারাগারেই বুধবারের বিচারিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়। খান ঐসব অভিযোগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে দাবি করেন এবং ঐ বিচারকে অবৈধ বলেন।
সরকার “নিরাপত্তা ঝুঁকির” অজুহাত দেখিয়ে বুধবারের শুনানি এই শতবর্ষ পুরনো ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলের কারাগারে সম্পাদন করে। এই কারাগারটি অত্যন্ত কুখ্যাত এবং এতে দণ্ডপ্রাপ্ত জঙ্গিদের পাশাপাশি অন্যান্য কয়েদিও রয়েছে।
মঙ্গলবার একটি ফেডারেল আদালত ইমরান খানের ৩ বছরের কারাদণ্ড স্থগিত করে ও তাকে জামিনে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দেয়। এ বিষয়টিকে তার আইনজীবীরা দুর্নীতির মিথ্যে অভিযোগের বিরুদ্ধে আইনি বিজয় হিসেবে অভিহিত করেন। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, এই ৭০ বছর বয়সী নেতা গোপন কূটনীতিক নথি মামলার কারণে এখনো রিমান্ডে রয়েছেন। যার ফলে ইমরান এখুনি কারাগার থেকে মুক্তি পাচ্ছেন না।
৫ আগস্ট ইমরান দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত হওয়ার পর পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন সংশ্লিষ্ট আইন অনুযায়ী ঘোষণা দেয়, তিনি আগামী ৫ বছরের জন্য নির্বাচনে অংশগ্রহণের যোগ্যতা হারিয়েছেন। ইমরান দুর্নীতির অভিযোগের বিরুদ্ধে আপিল করেন। যার ফলে মঙ্গলবার তার কারাদণ্ড স্থগিত করা হয়।
কূটনীতিক নথি মামলায় ইমরানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়ার জন্য পাকিস্তানে সাইফার নামে পরিচিত একটি গোপনীয় তারবার্তা জনসম্মুখে প্রকাশ করেন। যা দেশটির রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা আইনের লঙ্ঘন।
ইমরানের আইনজীবীরা কারাগারের ভেতরে আদালতের শুনানি আয়োজনের জন্য সরকারের প্রতি নিন্দা জ্ঞাপন করেছেন। তারা দাবি করেন, এতে প্রমাণ হয় ইমরানকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র চক্রান্ত করেছিল এবং পাকিস্তানের কর্তৃপক্ষ বিষয়টিকে জনগণের কাছ থেকে গোপন রাখার জন্য উন্মুক্ত আদালতে বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে না।