শনিবার জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা এবং শরণার্থী সুরক্ষা সংস্থা, অনিবন্ধিত আফগান অভিবাসন প্রত্যাশীদের তাদের নিজ দেশে জোরপূর্বক প্রত্যাবাসন না করতে পাকিস্তানের প্রতি যৌথভাবে আহবান জানিয়েছে। সংস্থাগুলো সতর্ক করেছে, আফগানিস্তানে ফিরে গেলে, সেখানে তারা ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে।
পাকিস্তান মঙ্গলবার তাদের দেশে অবৈধভাবে বসবাসরত সকল অভিবাসন প্রত্যাশীকে ১ নভেম্বরের মধ্যে দেশটি ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে; অবৈধ অভিবাসীদের মধ্যে ১৭ লাখ আফগান নাগরিকও রয়েছে।পাকিস্তান বলেছে, এই সময় সীমার পর তাদের স্বদেশে ফেরত পাঠানো হবে। এমন ঘোষণার পর জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে এই অনুরোধ জানানো হলো।
অসংখ্য পরিবার ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার বা জোরপূর্বক প্রত্যাবাসন এড়াতে আফগানিস্তানের উদ্দেশে রওনা হয়েছে। পাকিস্তানের তথ্য মন্ত্রক এই নীতির আওতায় যারা আছেন, তাদেরকে প্রতিদিন মনে করিয়ে দিচ্ছে যে তাদের এই দেশে থাকার দিন ফুরিয়ে আসছে। এমন প্রেক্ষাপটে আফগান নাগরিকরা স্বদেশে ফিরে যাচ্ছে।
প্রত্যাবাসন যোগ্য অভিবাসন প্রত্যাশীদের মধ্যে এমন হাজার হাজার পরিবার রয়েছে; যারা ২০২১ এর আগস্টে কাবুলে কট্টরপন্থী তালিবান ক্ষমতায় ফিরে আসার পর, দেশ ছেড়ে পালিয়েছিলো। উল্লেখ্য, তালিবান তাদের দেশে নারীদের শিক্ষাগ্রহণ ও চাকরির ওপর ঢালাও বিধিনিষেধ আরোপ করেছে।
আইওএম ও ইউএনএইচসিআর নানা সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও আফগান নাগরিকদের প্রতি প্রায় ৪ দশক ধরে “অকৃপণ বদান্যতা” দেখানোর জন্য পাকিস্তানের প্রশংসা করেছে। আর, পাকিস্তানে থাকা আফগান অভিবাসন প্রত্যাশীরা যেন স্বেচ্ছায়, নিরাপদে, সম্মানের সঙ্গে এবং কোনো ধরনের চাপ ছাড়া তাদের দেশে ফিরে যেতে পারে সে বিষয়ে আবারো আহবান জানিয়েছে।
জাতিসংঘের সংস্থা দুটি সতর্ক করেছে, “আফগান নাগরিকদের জোর করে প্রত্যাবাসন করা হলে, তারা ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের মুখোমুখি হতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে, পরিবারের সদস্যদের আলাদা হয়ে যাওয়া ও অপ্রাপ্তবয়স্কদের প্রত্যাবাসনের আশংকা।”
অনিবন্ধিত আফগান নাগরিকদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর অন্যতম কারণ হিসেবে, সন্ত্রাসী কার্যক্রম বেড়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করেছে পাকিস্তান। কর্তৃপক্ষ জানায়, এ বছর ২৪টি আত্মঘাতী বোমা হামলার মধ্যে ১৪টি ঘটিয়েছে আফগান নাগরিকরা।