ইসরাইলের বিরুদ্ধে হামাস হামলা চালানোর পর যেসব থাই কর্মী নিহত বা অপহৃত হয়েছেন, তাদের পরিবারের সদস্যরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে তাদের নিকটজনদের ভাগ্যে কী ঘটেছে, সে বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা চালাচ্ছেন। সংঘাতস্থল থেকে হাজার হাজার কিলোমিটার দূরে থেকেও থাইল্যান্ড এ ঘটনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত রাষ্ট্রের তালিকার অন্যতম শীর্ষে উঠে আসছে।
আশংকা করা হচ্ছে, এই সহিংসতায় ১৮ জন থাই নাগরিক মারা গেছেন। মঙ্গলবার থাই পররাষ্ট্র মন্ত্রক এই তথ্য জানায়। মন্ত্রক মনে করছে আরও ১১ জনকে হামাস জিম্মি করে রেখেছে। ভুক্তভোগীদের প্রায় সবাই থাইল্যান্ডের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় দরিদ্র অঞ্চল ইসানের বাসিন্দা।
তবে মন্ত্রক জানিয়েছে, এই সংখ্যাগুলো অসমর্থিত সূত্র থেকে জানা গেছে। এই রক্তাক্ত সংঘাতের মাঝে ব্যাংককে অবস্থিত ইসরাইলি দূতাবাস জানিয়েছে, সামরিক অভিযান চলাকালীন অবস্থায় তাৎক্ষণিকভাবে নিহত বা জিম্মি হওয়া থাই নাগরিকের সংখ্যা জানানো সম্ভব নয়।
হামাসের হামলায় শত শত ইসরাইলি নিহত হওয়ার পর ইতোমধ্যে দেশটি পালটা হামলা শুরু করেছে। হামাস সতর্ক করেছে, যদি গাজায় ইসরাইল হামলা চালায়, তবে তারা কোনো সতর্কবাণী ছাড়াই জিম্মিদের হত্যা করতে শুরু করবে। গাজায় ইতোমধ্যে বেসামরিক ব্যক্তিসহ শত শত মানুষ নিহত হয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্র ১৯৯৭ সালে হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে। ইসরাইল, মিশর, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাপানও হামাসকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে।
আনুমানিক প্রায় ৩০ হাজার থাই নাগরিক ইসরাইলে কাজ করেন। যাদের অনেকেই গাজার সীমান্তবর্তী কিবুতজ খামারগুলোতে কাজ করে মাসে সর্বোচ্চ ১ হাজার ডলার উপার্জন করেন। এটি থাইল্যান্ডের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে একই ধরণের কাজের মজুরির চেয়ে বেশ কয়েকগুণ বেশি।
যাদেরকে জিম্মি করা হয়েছে বলে আশংকা করা হচ্ছে, তাদের ভীতসন্ত্রস্ত আত্মীয়রা পরিবারের এই সদস্যদের বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাচ্ছেন না। তাদেরকে থাই কর্মীদের টিকটক ও ফেসবুকে পোস্ট করা ভিডিওর সহায়তা নিতে হচ্ছে। অনেকেই হামাসের হামলার পর এ ধরনের ভিডিও পোস্ট করেছেন।
থাইল্যান্ড ইসরাইলের প্রবাসী কর্মীর সবচেয়ে বড় উৎসের অন্যতম। থাই শ্রম মন্ত্রক জানিয়েছে, বেশিরভাগ কর্মী খামারে কাজ করেন এবং দেশে প্রতি মাসে রেমিট্যান্স পাঠান। মন্ত্রক আরও জানায়, প্রায় ৭ হাজার থাই নাগরিক সম্ভবত অবৈধভাবে ইসরাইলে কাজ করছে। মন্ত্রক এসব কর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে আশংকা প্রকাশ করে, কারণ তারা নিখোঁজ হলেও তাদেরকে কাজ দেওয়া প্রতিষ্ঠান সেটা উল্লেখ নাও করতে পারে। ইসরাইল ছাড়া শুধু তাইওয়ান ও দক্ষিণ কোরিয়ায় আরও বেশি থাই কর্মী রয়েছেন, বলছে মন্ত্রক।