বিরল এক রায়ে পাকিস্তানের একটি ফেডারেল আদালত বৃহস্পতিবার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ দেশে ফিরে আসলে তাকে গ্রেপ্তার করা থেকে কর্তৃপক্ষকে বিরত করেছে। চার বছর স্বেচ্ছা নির্বাসনে থাকার পর শনিবার তাঁর দেশে ফেরার কথা।
এই রায় তিনবারের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর শনিবার দেশে ফেরার পথ প্রশস্ত করেছে। তার দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ বলেছে, তিনি একই দিনে তার জন্মভূমি পূর্বাঞ্চলীয় শহর লাহোরে একটি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন সমাবেশে ভাষণ দেবেন।
শরীফ ২০১৮ সালে দুটি মামলায় দুর্নীতির অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হন এবং মোট ১৪ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন। তিনি অভিযোগগুলো অস্বীকার করেছেন এবং দাবি করেছেন, শক্তিশালী পাকিস্তানি সেনাবাহিনী তাকে ২০১৭ সালে ক্ষমতা থেকে উচ্ছেদ করার পেছনে কাজ করেছে এবং পরবর্তীতে আদালত তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে।
২০১৯ সালে একটি প্রাদেশিক হাইকোর্ট নজিরবিহীন এক রায়ে প্রবীণ এই রাজনীতিবিদকে চিকিৎসার উদ্দেশে চার সপ্তাহের জন্য লন্ডনে যাওয়ার অনুমতি দেয়। অনুমতি দেয়ার সময় কোর্ট তার অঙ্গীকার গ্রহণ করে যে, তিনি কারাভোগের মেয়াদ পূরণ করতে ফিরে আসবেন।
শরীফ পাকিস্তানে ফিরে আসতে ব্যর্থ হন এবং পরে তাকে পলাতক ঘোষণা করা হয়। ১৯৪৭ সালে দেশটি ব্রিটেন থেকে স্বাধীনতা লাভ করার পর থেকে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বেশ কয়েকবার অভ্যুত্থান করে এবং তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে দেশটি শাসন করে।
এই অবধি সর্বশেষ অভ্যুত্থানটি ১৯৯৯ সালে জেনারেল পারভেজ মোশাররফ দ্বারা সংঘটিত হয়েছিল। ওই অভ্যুত্থানে নওয়াজ শরীফ দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় থাকাকালীন তাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছিল। তার পর একদশক ধরে পাকিস্তানে সামরিক শাসন চলে। ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী পরে বিতর্কিত সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়ে কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন।
পরে সৌদি আরবের হস্তক্ষেপে শরীফকে তার পরিবারের সাথে নির্বাসনে যেতে দেয়া হয়। তিনি ২০০৭ সালে পাকিস্তানে ফিরে আসেন এবং ২০১৩ সালে তার দল নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর রেকর্ড সংখ্যক তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন।