রয়টার্স এবং এএফপি প্রত্যেকে দক্ষিণ লেবাননে গত অক্টোবরে সংঘটিত একটি হামলার তদন্ত প্রকাশ করেছে। ওই হামলায় একজন সাংবাদিক নিহত এবং ছয়জন আহত হয়। তাদের অনুসন্ধানে ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, ইসরাইলি ট্যাংকের গোলা এই দলটিকে আঘাত করেছিল।
১৩ অক্টোবর সাংবাদিকরা লেবাননের সীমান্ত গ্রাম আলমা আল-চাবের কাছে জড়ো হয়ে আশেপাশের এলাকার ভিডিও ধারণ করার জন্য গেলে সেখানে হামলাটি সংঘটিত হয়। ওই এলাকায় সেসময় ইসরাইলের সেনাবাহিনী এবং ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের মধ্যে আন্তঃসীমান্ত সংঘর্ষ হচ্ছিল।
রয়টার্স এবং এএফপি জানিয়েছে, সাংবাদিকরা ফ্ল্যাক জ্যাকেট ও হেলমেট পরা অবস্থায় ছিল। তাদেরকে স্পষ্টভাবে গণমাধ্যম সদস্য হিসেবে চিহ্নিত করা যাচ্ছিল।
রয়টার্সের প্রধান সম্পাদক আলেসান্দা গ্যালোনি এক বিবৃতিতে বলেন, "আমরা ইসাম হত্যার নিন্দা জানাই।" তিনি আরও বলেন, "আমরা ইসরাইলকে এটি কীভাবে ঘটেছে তার ব্যাখ্যা দেয়ার এবং তার মৃত্যু ও এএফপি-র ক্রিস্টিনা অ্যাসি, আমাদের সহকর্মী থাইয়ার আল-সুদানী ও মাহের নাজেহ এবং অন্য তিনজন সাংবাদিকের আহত করারর জন্য দায়ীদের জবাবদিহি করতে আহ্বান জানাই। ইসাম একজন উজ্জ্বল ও আবেগপ্রবণ সাংবাদিক ছিলেন। তিনি রয়টার্সে সকলের অনেক প্রিয় ছিলেন।"
রয়টার্স ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর আন্তর্জাতিক মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল রিচার্ড হেক্টকে উদ্ধৃত করেছে। তিনি বলেছেন, “আমরা সাংবাদিকদের লক্ষ্যবস্তু করি না।”
এএফপি গ্লোবাল নিউজ ডিরেক্টর ফিল চেটউইন্ড ইসরাইলকে কী ঘটেছে তার স্পষ্ট ব্যাখ্যা দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ হামলার বিষয়ে নিজস্ব তদন্ত পরিচালনা করেছে। বৃহস্পতিবার তারা বলেছে, তাদের ফলাফলগুলো “ইঙ্গিত করে যে সাংবাদিকরা চলমান সহিংসতা থেকে বেশ দূরে ছিলেন। গণমাধ্যমের সদস্য হিসেবে তাদেরকে স্পষ্টভাবে সনাক্ত করা যাচ্ছিল এবং তারা দুজন পরপর দুটি হামলায় আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার আগে অন্তত ৭৫ মিনিট অনড় ছিল।”
এইচআরডব্লিউ জানিয়েছে, সাংবাদিকরা যেখানে কাজ করছিলেন তার কাছাকাছি কোনো সামরিক লক্ষ্যবস্তুর প্রমাণ পাওয়া যায়নি। গোষ্ঠীটি বলেছে, হামলাগুলো "স্পষ্টতই বেসামরিকদের ওপর ইচ্ছাকৃত আক্রমণ ছিল, যা একটি যুদ্ধাপরাধ।"
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও এই হামলার পর্যালোচনা করেছে। তারা এই সিদ্ধান্তে এসেছে যে, এটি “সম্ভবত বেসামরিকদের ওপর সরাসরি আক্রমণ যেগুলোর যুদ্ধাপরাধ হিসেবে তদন্ত করা উচিত।”
এই প্রতিবেদনের কিছু তথ্য এএফপি এবং রয়টার্স থেকে নেয়া হয়েছে।