যুক্তরাষ্ট্রের একজন বর্তমান কর্মকর্তা এবং একজন সাবেক কর্মকর্তা জানিয়েছেনে বাইডেন প্রশাসন, গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে অভিযানে ইসরাইলের মারকাভা ট্যাংকের জন্য ৪৫ হাজার গোলা বিক্রির অনুমোদন করতে কংগ্রেসকে অনুরোধ জানিয়েছে।
এই যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র সরবরাহের ব্যাপারে ওয়াশিংটনের অনুরোধ ক্রমবর্ধমান উদ্বেগকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। গত দুই মাস আগে ইসরাইলে হামাসের হামলার পর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধে ফিলিস্তিনি ছিটমহলটিতে হাজার হাজার বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়।
অস্ত্রের সম্ভাব্য বিক্রয় মূল্য ৫০ কোটি ডলারেরও বেশি। বর্তমানে এটি সিনেটের বৈদেশিক সম্পর্ক এবং হাউস ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির অনানুষ্ঠানিক পর্যালোচনায় রয়েছে। ইউক্রেন এবং ইসরাইলের জন্য প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ১১ হাজার ৫০ কোটি ডলারের পরিপূরক প্যাকেজ অনুরোধের অন্তর্ভূক্ত নয় এটি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রকের সাবেক মুখপাত্র জশ পল এবং নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি অস্ত্র ব্যবহারের বিষয়ে মানবাধিকার কর্মীদের আপত্তি রয়েছে। তা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রক কংগ্রেসের কমিটিগুলোকে চুক্তিতে দ্রুত স্বাক্ষর করার জন্য চাপ দিচ্ছে।
এদিকে, ইসরাইল ও ফিলিস্তিনি জঙ্গি গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে চলমান যুদ্ধে দ্রুতই মানবিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ একটি পদক্ষেপ গ্রহণ করলে তাতে শুক্রবার ভেটো দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এর ফলে নিজের মিত্র রাষ্ট্রকে সমর্থন করতে গিয়ে কুটনৈতিক ভাবে যুক্তরাষ্ট্র বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে।
যুক্তরাষ্ট্র মনে করে গাজায় যুদ্ধবিরতি হামাস্ কে পুনরায় সংঘটিত হতে সাহায্য করবে। ৭ অক্টোবর ইসরাইলের উপর হামলায় জঙ্গিরা যাদের জিম্মি করেছে তাদের মুক্তির জন্য এবং বেসামরিক লোকজনের সুরক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্র মনে করে সাময়িক ভাবে যুদ্ধ থামানো যেতে পারে ।
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে যুক্তরাষ্ট্র ১৯৯৭ সালে হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে। ইসরাইল, মিশর, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাপানও হামাসকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাগনেস ক্যালামার্ড যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোর সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে বলেন,"ভেটো ব্যবহার নৈতিকভাবে সমর্থনযোগ্য নয়। এটি নৃশংস অপরাধ প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক আইন সমুন্নত রাখার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের দায়িত্বে অবহেলারই নামান্তর।"
ইসরাইলি সেনাবাহিনীর হামলায় গাজার খান ইউনিস শহরে শুক্রবার অন্তত ৬ জন নিহত হয়েছেন।
গত ১ ডিসেম্বর ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে সপ্তাহব্যাপী যুদ্ধবিরতির মধ্যে হামাসের হাতে আটক প্রায় ১০০ জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হয়। আরও প্রায় ১৪০ জন জিম্মি রয়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
যুদ্ধবরতির আর কোন লক্ষণ এখনো দেখা যাচ্ছে না।
গত ৭ অক্টোবর হামাস যোদ্ধারা দক্ষিণ ইসরাইলে প্রবেশ করে প্রায় ১,২০০ মানুষকে হত্যা ও ২৪০ জনকে জিম্মি করে। এরপর গাজায় হামাসের শাসনের অবসান ঘটাতে সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরাইল।