ইসরাইলের সেনাবাহিনী বলেছে, বৃহস্পতিবার তাদের বাহিনী পশ্চিম তীরে হামাসের সন্দেহভাজন সাহায্যকারিদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছে। তারা জঙ্গি গোষ্ঠী হামাসকে অর্থায়নে সহায়তা করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এদিকে গাজা ভূখণ্ডে হামাসকে নির্মূল করার জন্য গাজার উত্তর, মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলে ইসরাইলের বিমান হামলা ও স্থল অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তারা পশ্চিম তীরের অভিযানে ২১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে এবং কয়েক মিলিয়ন ইসরাইলি মুদ্রা বাজেয়াপ্ত করেছে।
ইসরাইলের বাহিনী জেনিনেও বিমান হামলা চালায় এবং স্থল সেনারা ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলিবর্ষণ করে। ইসরাইলের বাহিনীর অভিযোগ, ফিলিস্তিনিরা তাদের ওপর গুলি চালাচ্ছিল।
পশ্চিম তীরে অভিযানটি ইসরাইলের সিরিজ অভিযানের মধ্যে সর্বসাম্প্রতিক ছিল। ইসরাইলের বক্তব্য, তাদের বাহিনী সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় বৃহস্পতিবার একটি প্রতিবেদন জারি করে বলেছে, ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের হামলার পর থেকে পশ্চিম তীরে মানবাধিকার পরিস্থিতির ‘দ্রুত অবনতি’ হয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় বলেছে, তারা ৭ অক্টোবর থেকে পশ্চিম তীরে ৩০০ ফিলিস্তিনির মৃত্যু লিপিবদ্ধ করেছে। এর মধ্যে ২৯১ জন ফিলিস্তিনি ইসরাইলের বাহিনীর হাতে, আটজন ইসরাইলের সেটেলারদের দ্বারা এবং একজন ইসরাইলি সেনাবাহিনী বা সেটেলারের হাতে নিহত হয়েছে।
জাতিসংঘের মানবিক কার্যালয় সতর্ক করেছে, গাজা ভূখণ্ডে তীব্র লড়াই, ঘন ঘন যোগাযোগ সমস্যা, রাস্তা অবরুদ্ধ থাকা এবং জ্বালানির অভাব “মানবিক কার্যক্রমের জন্য উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ।”
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আরও বলেছে, তাদের টিম গাজার উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের হাসপাতালে অংশীদারদের সাথে সরবরাহ বিতরণের জন্য “উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ মিশন গ্রহণ করেছে।”
৭ অক্টোবর হামাস জঙ্গিরা ইসরাইলের সীমান্ত অতিক্রম করে দক্ষিণাঞ্চলে আক্রমণ করে। ইসরাইল জানায়, এই হামলায় ১২০০ মানুষ নিহত হয়েছে। হামাস প্রায় ২৪০ জনকে জিম্মি করেছে, যাদের মধ্যে ১২৯ জন গাজায় রয়ে গেছে।
প্রত্যুত্তরে ইসরাইল হামাসকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার অঙ্গীকার করে এবং গাজায় বিমান, স্থল ও সামুদ্রিক হামলা চালায়। হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরাইলের আক্রমণের ফলে গাজায় বিশাল ধ্বংস্তূপ তৈরি হয়েছে এবং ২১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
ইসরাইলি সেনাবাহিনী বলছে, তাদের ১৬৭ জন সেনা নিহত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র ১৯৯৭ সালে হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে। ইসরাইল, মিশর, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাপানও হামাসকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে।
এই প্রতিবেদনের কিছু তথ্য এপি, এএফপি এবং রয়টার্স থেকে নেয়া হয়েছে।