ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় শনিবার ইউক্রেন বিষয়ক দৈনিক গোয়েন্দা আপডেটে বলেছে, চলতি মাসে ইউক্রেনের দুটি ছোট গ্রাম দখল করেছে রাশিয়া। তবে, গ্রামগুলোকে “কৌশলগতভাবে গুরুত্বহীন” বলে উল্লেখ করেছে ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
বাখমুতের নিকটবর্তী ছোট্ট গ্রাম ভেসেলের যুদ্ধপূর্ব জনসংখ্যা ছিলো ১০২ জন। আর, খারকিবের নিকটবর্তী ক্রোখমালনে গ্রামের বাসিন্দা ছিলো ৪৫ জন।
মন্ত্রণালয় বলছে, গ্রামগুলো দখল করার ঘটনা “রাশিয়ার ছোটখাটো, কিন্তু ক্রমবর্ধমান অগ্রাভিযানের ধারাবাহিকতাকে প্রতিনিধিত্ব করে;” তবে, ইউক্রেন মনোযোগ ধরে রেখেছে তাদের সক্রিয় প্রতিরক্ষায়।
ইউক্রেনের আভদিভকা শহর দখল করার বিষয়ে রাশিয়ার কৌশল কাজ করবে বলেও আশা করেনি ব্রিটিশ মন্ত্রণালয়। কারণ, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে রাশিয়া তাদের সৈন্য এবং সাঁজোয়া যান সমুহের ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়। পরে, রুশ বাহিনী টানেলের ভেতর দিয়ে আভদিভকায় প্রবেশের চেষ্টা করবে বলে ধারণা করা হয়।
গত অক্টোবর থেকে রাশিয়া ওই সুড়ঙ্গ দিয়ে আভদিভকায় অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ মন্ত্রণালয়। ইউক্রেনের ড্রোন হামলা এড়ানোর পরিকল্পনা হিসেবে রাশিয়া এই চেষ্টা করছে বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রতিবেদনে, “আগামী কয়েক সপ্তাহ আভদিভকা ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে থাকবে,” বলেও পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।
এদিকে, ইউক্রেনের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান শুক্রবার বলেছেন, যুদ্ধবন্দীদের বিনিময়ের লক্ষ্যে, ইউক্রেনের দিকে যাওয়া ৬৫ জন ইউক্রেনীয় যুদ্ধবন্দী বহনকারী রুশ বিমানটি রাশিয়ার মাটিতই বিধ্বস্ত হয়েছে; সেই বিমান সম্পর্কে কিয়েভের কাছে বিশ্বাসযোগ্য বা বিস্তারিত কোন তথ্য ছিলো না।
রাশিয়ার বেলগোরোদ অঞ্চলে ইলিউশিন আইএল-৭৬ বিমান ভূপাতিত করার ঘটনায়, মস্কো ও কিয়েভের মধ্যে বাকবিতণ্ডা অব্যাহত রয়েছে। দুর্ঘটনায় ৭৪ জন আরোহীর সবাই মারা যান।
শুক্রবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন টেলিভিশনে দেয়া এক ভাষণে বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার বিষয় নিয়ে প্রথম কথা বলেছেন। তিনি বলেন, "আমি জানি না তারা এটা ইচ্ছাকৃতভাবে করেছে নাকি ভুলবশত করেছে, কিন্তু এটা যে তারাই করেছে তা নিশ্চিত।” তিনি আরো বলেন, ভুলবশত হোক, আর ইচ্ছাকৃত হোক, এটা অপরাধ; অবহেলার অপরাধ বা ইচ্ছাকৃত অপরাধ।
নিক্ষিপ্ত ক্ষেপনাস্ত্রগুলো আমেরিকান বা ফরাসি বলে দাবি করেন পুতিন। “আর, খুব তড়াতাড়ি, অবশ্যই দুই-তিন দিনের মধ্যে তা নিশ্চিতভাবে জানা যাবে;” বলেন তিনি।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় তদন্ত কমিটি শুক্রবার জানিয়েছে, তারা জেনেটিক পরীক্ষার জন্য রুশ সামরিক বিমানের বিধ্বস্ত হওয়ার স্থান থেকে ইউক্রেনের পরিচয়পত্র এবং উল্কি আঁকা দেহাংশ উদ্ধার করেছে। সংগৃহীত প্রমাণের মধ্যে, দুর্ঘটনায় নিহত ইউক্রেনীয় সেনাদের পরিচিতির নথির পাশাপাশি রাশিয়ার ফেডারেল পেনিটেনশিয়ারি সার্ভিসের নথিও রয়েছে।