অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বারাক ওবামা


ফাইল ছবি - সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা
ফাইল ছবি - সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা

যুক্তরাষ্ট্রে ফেব্রুয়ারি মাসকে 'ব্ল্যাক হিস্টরি মান্থ' হিসাবে পালন করা হয়। এর মাধ্যমে এই দেশের ইতিহাসে যেসব কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিক বা ঘটনা বিশেষ অবদান রেখেছে , সেগুলো তুলে ধরা হয়। এর অংশ হিসাবে ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলা এই দেশের বিখ্যাত কিছু কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিকের অবদানের কথা তুলে ধরছে।

বারাক ওবামা

প্রশান্ত মহাসাগরীয় দীপপুঞ্জ হাওয়াই যুক্তরাষ্ট্রের ৫০তম অঙ্গরাজ্য, কিন্তু মূল ভূখণ্ড থেকে ২,০০০ মাইল দূরে। সেই দীপপুঞ্জ যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান অর্জন করেছে।

১৯৬১ সালের ৪ অগাস্ট – বারাক হুসেইন ওবামা জন্মগ্রহণ করেন হাওয়াইয়ের হনলুলু শহরে। তাঁর মা, শ্বেতাঙ্গ আমেরিকান অ্যান ডানাম-এর সাথে পূর্ব আফ্রিকার দেশ কেনিয়া থেকে আসা ছাত্র বারাক ওবামা, সিনিয়রের পরিচয় – এবং পরবর্তীতে বিয়ে হয় হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ে।

বারাক ওবামা আমেরিকার ইতিহাসে নিজের নাম লেখেন ২০০৮ সালের ৪ নভেম্বর, যখন তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।

‘’তাঁর জীবনকাহিনী হচ্ছে আমেরিকার গল্প – দেশের অন্তঃস্থল থেকে মূল্যবোধ, একটি স্থিতিশীল মধ্যবিত্ত পরিবারে বড় হওয়া, শিক্ষা এবং পরিশ্রম দিয়ে এগিয়ে যাওয়া, এবং একটি দৃঢ় ধারণা যে এরকম আশীর্বাদপুষ্ট একটি জীবন অন্যের সেবা করেই কাটানো উচিত,’’ এভাবেই যুক্তরাষ্ট্রের ৪৪তম প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সম্পর্কে ওয়াইট হাউস ওয়েবসাইটে লেখা হয়েছে।

অ্যান ডানাম এবং ওবামা সিনিয়রের মধ্যে বিচ্ছেদ হবার পর বারাকের মা ইন্দোনেশিয়া থেকে আসা ছাত্র লোলো সোয়েতোরোকে বিয়ে করেন। বারাক ওবামার বয়স যখন ৬, তখন তাঁর মা’র সাথে ইন্দোনেশিয়া যান। সেখানে তাঁর স্কুল শিক্ষার সূচনা হয়। তিনি ১৯৭১ সালে হনলুলুতে ফিরে তাঁর নানা-নানির কাছেই বড় হয়ে উঠেন।

“আমেরিকা তাঁকে যে সুযোগ দিয়েছে, সে সুযোগ যাতে সমাজের সকল স্তর থেকে আসা শিশু পায়, তার জন্য নিজের পুরো জীবন উৎসর্গ করার প্রেরণা ওবামা পেয়েছেন নানা-নানির কাছ থেকে পাওয়া মূল্যবোধ এবং তাঁর নিজস্ব, স্বভাবসিদ্ধ আশাবাদের সংমিশ্রণে,"দ্য অফিস অফ বারাক অ্যান্ড মিশেল ওবামা" ওয়েবসাইটে তাঁর সম্পর্কে লেখা হয়েছে।

ফাইল - বারাক ওবামা এবং মিশেল ওবামা
ফাইল - বারাক ওবামা এবং মিশেল ওবামা

বারাক ওবামা দু’বছর লস অ্যাঞ্জেলেসের অক্সিডেন্টাল কলেজের পর নিউ ইয়র্কের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক পড়েন। কিছু দিন শিকাগো শহরে কমিউনিটি অর্গানাইজার হিসেবে, বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সাথে গৃহহীন ও বেকার লোকজনের সাথে কাজ করেন।

তিনি ১৯৮৮ সালে যান হার্ভার্ড ল’ স্কুলে আইন পড়তে – যেখানে তিনি মর্যাদা-সম্পন্ন আইন-বিষয়ক জার্নাল হার্ভার্ড ল’ রিভিউ-এর প্রথম আফ্রিকান-আমেরিকান সভাপতি হয়ে জাতীয় পর্যায়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

এ সময়ে, ১৯৮৯ সালের দিকে, বারাক ওবামার পরিচয় হয় মিশেল রবিনসনের সাথে, যিনিও হার্ভার্ড থেকে পাশ করা একজন আইনজীবী ছিলেন। বছর তিনেক পর মিশেল ও বারাকের বিয়ে হয়।

হার্ভার্ডের পর ওবামা ইলিনয় রাজ্যে ফিরে যান, শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবিধানিক আইনে শিক্ষক হিসেবে কাজ শুরু করেন। এ সময় ওবামার রাজনৈতিক জীবনেরও সূচনা হয় এবং ১৯৯৬ সালে ইলিনয় রাজ্যের সেনেটে নির্বাচিত হন।

আট বছর পর ২০০৪ সালে বারাক ওবামা যুক্তরাষ্ট্র সেনেট-এ নির্বাচিত হয়ে ওয়াশিংটনের রাজনীতিতে পদার্পণ করেন। সে বছর ডেমক্র্যাট দলের জাতীয় কনভেনশনে একটি বহুল-প্রশংসিত ভাষণ দিয়ে সবার নজরে আসেন।

“কিছু কিছু পর্যবেক্ষক সাথে সাথে তাঁকে ভবিষ্যতের প্রেসিডেন্ট হিসেবে চিহ্নিত করেন, কিন্তু বেশির ভাগ লোক মনে করেননি যে সেটা খুব শীঘ্র ঘটবে,’’ ওয়াইট হাউস ওয়েবসাইটে ওবামার জীবনীতে লেখা হয়েছে।

কিন্তু ঘটনা তাই হল। মাত্র চার বছর সেনেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করার পর, ৪৭ বছর বয়সে বারাক ওবামা ২০০৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জন ম্যাককেইনকে বড় ব্যবধানে পরাজিত করেন।

XS
SM
MD
LG