মিয়ানমারে ঢালাও মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নিপীড়নের নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব

ফাইল- জেনেভায় জাতিসংঘ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক। (৯ ডিসেম্বর, ২০২২)

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক , ক্ষমতা কব্জায় রাখার জন্য মিয়ানমারের সামরিক নেতাদের ক্রমবর্ধমান নৃশংসতা ও দমন-পীড়নের নিন্দা জানিয়েছেন।

তুর্ক বলেছেন, প্রায় দুই বছর আগে, ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি দেশটির গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে সামরিক অভ্যুত্থান শুরু হওয়ার পর থেকে, মিয়ানমার আরও গভীর সংকটে নিমগ্ন হয়েছে।

তুর্কের মুখপাত্র জেরেমি লরেন্স বলছেন, দেশটিতে গণহারে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বেড়ে গেছে। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষায় সামরিক বাহিনীর আইনি বাধ্যবাধকতা পুরোপুরি উপেক্ষা করে সহিংসতা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে।

সামরিক বাহিনীর হাতে কমপক্ষে ২,৮৯০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপের ফলে ১২ লক্ষ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। তাছাড়া, সহিংসতা ও নিপীড়নের কারণে প্রায় ৭০,০০০ লোক দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে।

শুক্রবার এক বিবৃতিতে তুর্ক বলেন, মিয়ানমারের বিপর্যয়কর এই পরিস্থিতির শান্তিপূর্ণ সমাধানের সহজ কোন রাস্তা নেই। শুক্রবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে তিনি বলেন দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান নেশনসের পাঁচ দফা ঐকমত্যকে মিয়ানমারের জেনারেলরা ঘৃণার চোখে দেখছেন।

লরেন্স বলেন, দেশটির হাইকমিশনার, সংকট সমাধানের জন্য অন্যান্য পদক্ষেপকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি এবং প্রেসিডেন্ট উ উইন মিন্টের মুক্তিসহ সব রাজনৈতিক বন্দীর মুক্তি।

“মানবাধিকারের প্রতি সম্মান পুনরুদ্ধার করা এই সংকটের অবসানের মূল চাবিকাঠি। মিয়ানমারের জেনারেলরা কয়েক দশকের পুরোনো ব্যবস্থাকে নির্মম ভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করছে। তারা নিজেরা ছাড়া আর কারো কাছে জবাবদিহি করতে চায় না। বেসামরিক নাগরিকদের উপর প্রতিদিনের হামলা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য যারা দায়ী তাদের অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে,"লরেন্স বলেন।

গত মাসে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ মিয়ানমার বিষয়ে সাত দশকের মধ্যে এই প্রথম একটি বিরল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এতে "দেশজুড়ে সব ধরনের সহিংসতা অবিলম্বে বন্ধ" করার দাবি জানানো হয়।