ব্রিটেনে বিঘ্নের দিন, অর্ধ লক্ষ মানুষের ধর্মঘটে যোগদান

ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টারে একটি বিক্ষোভে ধর্মঘট অবস্থানরত শিক্ষকদের দেখা যায়। (১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩)

ব্রিটেনের হাজার হাজার স্কুল তাদের আংশিক বা সমস্ত শ্রেণিকক্ষ বন্ধ করে দিয়েছে।ট্রেন পরিষেবা অচল হয়ে পড়েছে। এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে ব্রিটেনে সবচেয়ে বড় শিল্প ধর্মঘটের এই দিনে বিমানবন্দরগুলিতে বিলম্ব হবার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ইউনিয়নগুলি জীবনযাত্রার ব্যয় সংকটের কারণে আরও ভাল বেতন প্রদানের জন্য, বুধবার সরকারের উপর চাপ বাড়িয়েছে।

ইউনিয়নগুলির একটি ফেডারেশন, ট্রেডস ইউনিয়ন কংগ্রেস, অনুমান করেছে শিক্ষক, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী, সরকারী কর্মচারী, সীমান্ত কর্মকর্তা এবং ট্রেন ও বাস ড্রাইভার সহ প্রায় অর্ধ লক্ষ শ্রমিক সারা দেশে ধর্মঘটে গিয়েছেন।

নার্স এবং অ্যাম্বুলেন্স কর্মীদেরসহ অন্যান্যদের কাজের ব্যাপারে আরও কিছু প্রতিবাদী কর্ম তত্পরতা আগামী দিন এবং সপ্তাহগুলিতে পরিকল্পনা করা হয়েছে।

বেতন ও কাজের পরিবেশ নিয়ে ইউনিয়ন ও সরকারের মধ্যে তিক্ত বিরোধ চলতে থাকায় কয়েক মাসের ধর্মঘট ব্রিটিশদের দৈনন্দিন রুটিনে ব্যাঘাত ঘটিয়েছে। বুধবার একাধিক শিল্পে একযোগে ধর্মঘট ইউনিয়নগুলির প্রতিবাদ কর্মকাণ্ডকে আরও শক্তিশালী করে তোলে।

শেষবার ২০১১ সালে পেনশন নিয়ে বিরোধের জের ধরে ১০ লাখেরও বেশি সরকারি কর্মী একদিনের ধর্মঘট পালন করেছিলেন। বুধবার জাদুঘরের কর্মী, লন্ডনের বাস চালক থেকে শুরু করে উপকুলরক্ষীরা এবং বিমানবন্দরে পাসপোর্ট বুথে থাকা বর্ডার কন্ট্রোল অফিসাররাও ধর্মঘটে ছিলেন।

শিক্ষক, স্বাস্থ্যকর্মী এবং আরও অনেকে বলছেন, গত এক দশকে তাদের মজুরি প্রকৃত অর্থে হ্রাস পেয়েছে এবং গত বছর জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি এই সমস্যাটিকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।

ট্রেডস ইউনিয়ন কংগ্রেস (টিইউসি) বুধবার বলেছে, মুদ্রাস্ফীতি বিবেচনায় নিলে ২০১০ সালের তুলনায় প্রতি মাসে গড়ে ২০৩ পাউন্ড (২৫০ ডলার) কম বেতন পাওয়া যায়।

যুক্তরাজ্যে মুদ্রাস্ফীতি ১০.৫ % দাঁড়িয়েছে, যা ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) জানিয়েছে, দেশটি হবে এ বছর একমাত্র বৃহৎ অর্থনীতি যা কমে গিয়ে নিষেধাজ্ঞায় আক্রান্ত রাশিয়ার চেয়েও খারাপ অবস্থায় যেতে পারে।

ন্যাশনাল এডুকেশন ইউনিয়ন জানিয়েছে, বুধবার প্রায় ২৩ হাজার স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত হচেছ যার মধ্যে আনুমানিক ৮৫ শতাংশ পুরোপুরি বা আংশিকভাবে বন্ধ থাকছে।

প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক আইনপ্রণেতাদের বলেছেন, শিক্ষকদের ধর্মঘট "ভুল"। তিনি দাবি করেছেন, ইতোমধ্যে তার সরকার ৩০ বছরের মধ্যে শিক্ষকদের জন্য সবচেয়ে বেশি বেতন বৃদ্ধি করেছে।

ইউনিয়ন নেতারা আলোচনা করতে অস্বীকার করার জন্য সরকারকে দোষারোপ করেছেন। ধর্মঘট থামাতে যথেষ্ট প্রস্তাব তারা দিয়েছেন।

টিইউসি'র সাধারণ সম্পাদক পল নওয়াক বলেন, সরকার গ্রহণযোগ্য বেতন প্রস্তাব আলোচনার টেবিলে না আনা পর্যন্ত শিল্প অস্থিরতা অব্যাহত থাকবে।