শনিবার বাখমুতের সুরক্ষায় নিয়োজিত ইউক্রেনীয় সেনারা পূর্বাঞ্চলের যুদ্ধবিধ্বস্ত এই শহর থেকে বেসামরিক ব্যক্তিদের পালিয়ে যেতে সহায়তা করার সময় রুশ বাহিনীর কাছ থেকে অধিক চাপের মুখোমুখি হয়েছে।
ইউক্রেনের এক সেনা প্রতিনিধি দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে জানান, এখন কোনো ধরনের যানবাহন ব্যবহার করে বাখমুত ছেড়ে যাওয়া অত্যন্ত বিপদজনক, এবং এ জন্য বেসামরিক ব্যক্তিদের পায়ে হেঁটে পালাতে হবে। এপি আরও জানায়, ইউক্রেনীয় সেনারা শনিবার বেসামরিক ব্যক্তিদের নিকটবর্তী গ্রাম খ্রোমোভে পৌঁছাতে সহায়তা করার জন্য একটি পনটুন সেতু নির্মাণ করেছে।
এই অস্থায়ী সেতুর ওপর দিয়ে পালাতে যেয়ে ১ নারী নিহত ও ২ জন পুরুষ গুরুতর আহত হয়েছেন বলে তাদেরকে সহায়তা দেওয়া ইউক্রেনীয় সেনারা জানিয়েছেন।
যুক্তরাজ্যের সামরিক গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তা ও অন্যান্য পশ্চিমা বিশ্লেষকদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ইউক্রেনীয় সেনারা শহরের ঠিক বাইরে ২টি গুরুত্বপূর্ণ সেতু ধ্বংস করেছে। যার ফলে ইউক্রেনীয় সেনাদের সঙ্গে তাদের সর্বশেষ পুনঃসরবরাহ রুট চাসিভ ইয়ারের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে।
এই সেতু ধ্বংসের মাধ্যমে খুব সম্ভবত কিয়েভ পিছু হটার ইঙ্গিত দিয়েছে। দ্য ইন্সটিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ার জানিয়েছে, চাসিভ ইয়ার সেতু ধ্বংসের মাধ্যমে ইউক্রেনীয় সেনারা খুব সম্ভবত “সুনির্দিষ্টভাবে পূর্ব বাখমুতের গোলযোগপূর্ণ অংশ থেকে সীমিত পরিসরে ও নিয়ন্ত্রিত প্রক্রিয়ায় নিজেদের প্রত্যাহার করে নেবে” এবং একইসঙ্গে নিশ্চিত করবে যাতে রুশ সেনারা তাদেরকে খুব সহজে ধাওয়া করতে না পারে।
যদি রুশ যোদ্ধারা বাখমুত দখল করতে পারে, তবে তা হবে বেশ কয়েক মাস পিছিয়ে থাকার পর যুদ্ধক্ষেত্রে তাদের এক বিরল অর্জন। এর মাধ্যমে তারা ইউক্রেনের সরবরাহ লাইনগুলো বিচ্ছিন্ন করে দিতে পারে এবং ডনেটস্ক অঞ্চলের অন্যান্য শক্তিশালী ইউক্রেনীয় ঘাঁটিগুলোতে আক্রমণ চালাতে পারে।
ইউক্রেনের জাতীয় রক্ষীদলের সহকারী কমান্ডার ভলোদিমির নাজারেঙ্কো ইউক্রেনের সংবাদমাধ্যম কিয়েভ২৪ কে শনিবার জানান, শহরটি রুশ বাহিনীর অব্যাহত ও তীব্র হামলা সত্ত্বেও এখনও ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে আছে।
তিনি বলেন, “বাখমুতের প্রতিটি ঘণ্টা নরকবাসের মতো”। “শত্রু ১ সপ্তাহ আগে বাখমুতের উত্তর-পশ্চিম ও উত্তরে সাফল্য পেয়েছে। ইউক্রেনের সেনারা পাল্টা আক্রমণ চালাচ্ছে। গত কয়েকদিন আমাদের কঠোর পরিশ্রম ও উদ্যোগের ফলে ফ্রন্টলাইনে স্থিতিশীলতা এসেছে”, তিনি বলেন।
বাখমুতের ডেপুটি মেয়র ওলেকসান্দার মারচেঙ্কো বিবিসিকে নিশ্চিত করেন, “ইউক্রেনীয় সশস্ত্র বাহিনীকে ধন্যবাদ, তারা এখনও শহরের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেনি”।