সুদানের সাবেক কর্মকর্তারা কারাগার ছেড়েছেন, বশিরের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন

দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত সুদানের সাবেক প্রেসিডেন্ট ওমর হাসান আল-বশিরকে আদালত কক্ষে বন্দী অবস্থায় দেখা যাচ্ছে। ৩১ আগস্ট ২০১৯। ফাইল ছবি।

সুদানে নড়বড়ে যুদ্ধবিরতির মধ্যে ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরসহ সাবেক শাসকগোষ্ঠীর সদস্যরা কারাগার ছেড়ে চলে গেছেন। এখন তাদের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

এদিকে আধাসামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সের বিরুদ্ধে কারাগারে হামলা চালানোর অভিযোগ করেছে সুদানের সামরিক বাহিনী। অন্যদিকে, আরএসএফ সাবেক নেতাদের মুক্তি দেওয়ার জন্য সামরিক বাহিনীকে অভিযুক্ত করেছে।

সুদানের সাবেক প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরের নিরাপত্তা কর্মকর্তা আহমেদ হারুন মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) ঘোষণা দেন, খার্তুমের কোবের কারাগার থেকে তাঁকে ও অন্য সাবেক নেতাদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

হারুন রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সুদান টিভিকে বলেন, কারাগারের কাছে সংঘর্ষের পর বন্দীদের রবিবার ছেড়ে দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়।

হারুন বলেন, সব বন্দীর পানি, বিদ্যুৎ ও স্বাস্থ্যসেবার ঘাটতিসহ মৌলিক সেবার অভাব রয়েছে। তিনি আরও জানান, চলমান গোলাগুলির কারণে কয়েকজন বন্দী আহত হয়েছেন।

এই ঘোষণার ফলে কারাগারে বন্দী থাকা বশিরসহ অন্য সাবেক কর্মকর্তাদের অবস্থান নিয়ে উদ্বেগ দেখা দেয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সামরিক সূত্রগুলো বার্তা সংস্থা এপিকে জানিয়েছে, বশির, হারুন ও সাবেক মন্ত্রী আবদেল-রহিম মুহাম্মদ হুসেইনকে একটি সামরিক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

সুদানের দারফুর অঞ্চলে অপরাধের দায়ে বশির, হারুন ও হুসেইনকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত খুঁজছে।

হাসপাতাল সূত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে নিশ্চিত করেছে, বশির একটি সামরিক হাসপাতালে আছেন।

সুদান ট্রিবিউনের খবরে বলা হয়েছে, বশির ও হুসেইন খার্তুমের পাশের শহর ওমদুরমানের একটি সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

আলিয়া মিলিটারি হাসপাতাল সূত্র ভয়েস অফ আমেরিকাকে জানিয়েছে, বশির ও হুসেইন তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে সেখানে বন্দী রয়েছেন।

সুদান টিভিকে দেওয়া এক বক্তব্যে হারুন বলেন, নিজেদের রক্ষার দায়িত্ব তাঁরা নিজেরাই নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। একবার কার্যকর বিচার ব্যবস্থা চালু হলে তাঁরা আইনের সামনে হাজির হতে প্রস্তুত বলেও জানিয়েছেন তিনি।

এ ছাড়াও, ১৫ এপ্রিল আধাসামরিক বাহিনীর র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সের (আরএসএফ) সঙ্গে লড়াইয়ে সুদানের সামরিক বাহিনীর প্রতি সমর্থনের কথাও ঘোষণা করেন হারুন।

সুদানের সামরিক বাহিনী কারাগার থেকে সাবেক নেতাদের মুক্তিতে কোনো ধরনের জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে। তারা আরএসএফের বিরুদ্ধে বন্দীদের মুক্তি এবং লুটপাট করার জন্য সেনাবাহিনীর ছদ্মবেশ নেওয়ার অভিযোগ করেছে।

আরএসএফ এই অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেছে, বশিরকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সামরিক বাহিনী সাবেক নেতাদের মুক্তি দিয়েছে।