বাংলাদেশে বুদ্ধপূর্ণিমা উদযাপিত

বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বুদ্ধপূর্ণিমা বাংলাদেশজুড়ে বৃহস্পতিবার (৪ মে) উদযাপিত হয়েছে।

বুদ্ধ পূর্ণিমা গৌতম বুদ্ধের জন্ম, জ্ঞান লাভ ও মৃত্যুকে চিহ্নিত করে। বৈশাখ মাসের এই পূর্ণিমা দিবসে বুদ্ধের জীবনের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল বলে দিনটি ‘বুদ্ধপূর্ণিমা’ নামে খ্যাত। খ্রিষ্টপূর্ব ৬২৩ অব্দের এই দিনে হিমালয়ের পাদদেশে কপিলাবস্তুতে সিদ্ধার্থ গৌতম হিসেবে বুদ্ধ জন্মগ্রহণ করেন। ৫৮৮ খ্রিষ্ট পূর্বাব্দের এই দিনে তিনি সাধনায় সিদ্ধি লাভ করে জগতে বুদ্ধ নামে খ্যাত হন এবং ৫৪৩ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে এই দিনে তিনি মহাপরিনির্বাণ লাভ করেন। সিদ্ধার্থের বুদ্ধত্ব লাভের মধ্য দিয়েই জগতে বৌদ্ধধর্ম প্রবর্তিত হয়।

এই দিনটি বাংলাদেশে সরকারি ছুটির দিন হিসেবে পালিত হয়।

দিবসটি উপলক্ষে বৌদ্ধ সম্প্রদায়কে শুভেচ্ছা জানিয়ে পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিরোধী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া।

রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন বলেন, “বৌদ্ধ সভ্যতা এবং এর সংস্কৃতি প্রাচীনকাল থেকেই বাংলার মানুষের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। পাহাড়পুর ও ময়নামতি শালবন বিহার এর উজ্জ্বল উদাহরণ”।

তিনি বলেন, গৌতম বুদ্ধ সর্বদা মানবজাতির কল্যাণ চেয়েছিলেন এবং তিনি সমগ্র বিশ্বকে শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেছিলেন।

মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন বলেন, “আমরা আশা করি বৌদ্ধ সম্প্রদায় এই ঐতিহ্য চর্চা ও বুদ্ধের মহান আদর্শকে সমুন্নত রেখে দেশের উন্নয়নে তাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে”।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বাণীতে বলেন, “সহিংসতা দ্বারা চালিত নিষ্ঠুর শক্তিকে দমন করতে, মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধ করতে এবং একটি শান্তিপূর্ণ সমাজ গড়ে তুলতে আজকের বিশ্বে বুদ্ধের শিক্ষা অনুসরণ করা প্রয়োজন”।

তিনি বলেন, “আমি আশা করি গৌতম বুদ্ধের আদর্শকে সমুন্নত ও লালন-পালনের মাধ্যমে সবাই বাংলাদেশকে একটি শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে ভূমিকা রাখবেন”।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া তাঁর বাণীতে বলেন, “বুদ্ধপূর্ণিমা শুধুমাত্র কোনো জাতি, গোষ্ঠী, সম্প্রদায় কিংবা বিশ্বের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের জন্য নয়, এটি সমগ্র বিশ্বের মুক্তিকামী ও মানবতাবাদী সকল মানুষের জন্য।…আমি আজ এই শুভ দিনে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল বৌদ্ধ সম্প্রদায়কে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন”।

তিনি বলেন, “গৌতম বুদ্ধের শিক্ষা হলো বিশ্ব মানবতার। বুদ্ধের ধর্ম–দর্শনের মূল বাণী ছিল অহিংসা, মৈত্রী ও করুণা প্রচার করা।…সুতরাং এই সময়ে গৌতম বুদ্ধের অহিংসা, মৈত্রী ও করুণার বাণী অতীব প্রয়োজন”।