মঙ্গলবার জাতিসংঘের মহাসচিব জানান, বেসামরিক ব্যক্তিদের সুরক্ষিত রাখার অঙ্গীকার রক্ষা করতে ব্যর্থ হচ্ছে সমগ্র বিশ্ব। এটি আন্তর্জাতিক মানবিক আইনে সংরক্ষিত দায়বদ্ধতা।
এ বিষয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলের এক বৈঠকে আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, “সবচেয়ে ভালো সুরক্ষা হচ্ছে শান্তি।” “আমাদেরকে সংঘাত প্রতিহত করার, বেসামরিক ব্যক্তিদের সুরক্ষিত রাখা, শান্তি বজায় রাখা ও যুদ্ধের রাজনৈতিক সমাধান খোঁজার উদ্যোগ আরও বাড়াতে হবে”, আরও জানান তিনি।
গুতেরেস জানান, যেখানেই যুদ্ধ হোক না কেনো, দেশগুলোর উচিৎ আন্তর্জাতিক মানবিক আইন মেনে চলা।
তিনি বলেন, “এটা হচ্ছে জীবন ও মৃত্যুর মধ্যে পার্থক্য। ধৈর্য্যশীলতা ও অরাজকতার মাঝে পার্থক্য। আতংকের মাঝে নিজেদের হারিয়ে ফেলা ও নিজেদের মানবিকতা বজায় রাখার মধ্যে পার্থক্য।”
গুতেরেস সর্বশেষ সংঘাতের দিকে ইঙ্গিত করে জানান, সুদানের প্রতিদ্বন্দ্বী জেনারেলদের মাঝে ৫ সপ্তাহ ধরে চলা যুদ্ধে ইতোমধ্যে শত শত মানুষ মারা গেছে, ১০ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং আড়াই লাখ মানুষ প্রতিবেশী দেশগুলোতে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। সেখানে খাবার, পানি ও জ্বালানির মজুদ প্রায় শেষ হয়ে এসেছে এবং দেশটির স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা ধ্বসে পড়ার উপক্রম হয়েছে।
“এই পরিস্থিতি যতই ভয়াবহ হোক না কেনো, এটি একক ঘটনা নয়”, বলে গুতেরেস উল্লেখ করেন, গত বছর প্রায় ১০ কোটি মানুষ বিশ্বজুড়ে যুদ্ধ, সহিংসতা, মানবাধিকার লঙ্ঘন বা নির্যাতনের কারণে বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
গুতেরেস জানান, যুদ্ধের প্রভাবের মাঝে রয়েছে বাড়তে থাকা খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা—২০২২ সালে মূলত যুদ্ধ ও অস্থিতিশীলতার কারণে ১১ কোটি ৭০ লাখেরও বেশি মানুষ অভুক্ত ছিল।
“এটা খুবই নিন্দাজনক”, বলেন জাতিসংঘের প্রধান। “গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর ক্ষতি খাদ্য উৎপাদনে বাধা দেয়, বিতরণ বন্ধ রাখে এবং মানুষকে নিরাপদ পানি থেকে বঞ্চিত করে।”
তিনি সম্প্রতি কৃষ্ণসাগর শস্য উদ্যোগের মেয়াদ ৬০ দিন বাড়ানোর বিষয়টিকে স্বাগত জানান, যার ফলে আগস্টের শুরু থেকে কৃষ্ণ সাগরের মধ্য দিয়ে ইউক্রেন থেকে প্রায় ৩ কোটি মেট্রিক টন শস্য রপ্তানি সম্ভব হয়েছে। যার ফলে ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়া আগ্রাসন চালানোর পরেও বিশ্ব বাজারে খাবারের দাম স্থিতিশীল হয়েছে।