সোমালিয়া সরকার জানিয়েছে, শুক্রবার মোগাদিশুর একটি হোটেলে আল-শাবাব জঙ্গিরা যে হামলা চালিয়েছিলো, তার অবসান হয়েছে।
রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় পার্ল বিচ হোটেলে ঢুকে পড়া জঙ্গিদের নিরাপত্তা বাহিনী সফলভাবে নিষ্ক্রিয় করেছে এবং বহু বেসামরিক নাগরিক-কে উদ্ধার করেছে।
সোমালিয়ার পুলিশ বলেছে, এই হামলায় ৯ জন নিহত হয়েছে এবং আরো ১০ জন আহত হয়েছে।
সোমালিয়ার পুলিশ কমান্ড এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে ছয়জন বেসামরিক নাগরিক এবং তিনজন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য।
পুলিশ আরো জানিয়েছে, হামলাস্থল থেকে শিশু, নারী ও বৃদ্ধসহ ৮৪ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।
সমুদ্র সৈকত সংলগ্নএই হোটেলে হামলাকারী আল-শাবাব জঙ্গিদের নিষ্ক্রিয় করতে অভিযান পরিচালনা করে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা ভয়েস অফ আমেরিকার সোমালি সার্ভিসকে জানায়, হামলা শুরু হয় পার্ল বীচ হোটেলের বাইরে অনন্ত দুটি বিষ্ফোরণের মধ্য দিয়ে। এর পর বন্দুকধারীরা হোটেলের ভেতর প্রবেশ করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরো জানান, গুলির শব্দ শোনা যায় এবং ভবনের ভেতরে অজ্ঞাত সংখ্যক লোক আটকা পড়ে। বাকি লোকজন পেছনের দরজা ও জানালা দিয়ে পালাতে সক্ষম হয়।
একজন প্রত্যক্ষদর্শী ভয়েস অফ আমেরিকার সোমালি সার্ভিসকে জানান, "বিশেষ এলিট বাহিনী হোটেলের উপরের তলাযগুলোতে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়।”
আল-কায়েদার সঙ্গে যুক্ত আল-শাবাব গোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করেছে।
এক বিবৃতিতে গোষ্ঠীটি বলেছে, “মুজাহিদীনরা পার্ল বীচ হোটেলে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়েছে এবং এখনো হোটেলটি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করছে।"
হামলার কেন্দ্রস্থল এই হোটেল , লিডো বীচের কাছে অবস্থিত।এটি রাজনীতিবিদ এবং রাজধানী শহর ভ্রমণকারী সোমালি প্রবাসীদের জন্য একটি জনপ্রিয় গন্তব্যস্থল।
এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে সরকার শহর ও এর আশেপাশে নতুন প্রশিক্ষিত সামরিক পুলিশ মোতায়েন করার পর, মোগাদিশুতে অপেক্ষাকৃত শান্তি বিরাজ করার সময় এই ঘটনা ঘটে। তবে এই গোষ্ঠীর সহিংসতা, দেশটির অন্যান্য অংশে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কারণ হয়েছে।
শুক্রবার আরেকটি ঘটনায়, কোরিওলি ও জান্নালে এলাকার মাঝামাঝি অবস্থিত মুরালে গ্রামে ভয়াবহ বিস্ফোরণে শিশুসহ অন্তত ২৭ জন নিহত এবং ৫০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। একটি অবিষ্ফোরিত গোলার বিষ্ফোরণ হলে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।
শুক্রবার দিনের আরও আগের দিকে আফ্রিকান ইউনিয়ন (এইউ) থেকে শান্তিরক্ষা মিশন নিরাপত্তা দায়িত্ব গ্রহণের জন্য প্রস্তুত বলে ঘোষণা দেয় সোমালিয়া। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ২৬২৮ এবং ২৬৭০ প্রস্তাব অনুযায়ী জুনের শেষ নাগাদ দুই হাজার এইউ সৈন্যের সোমালিয়া ত্যাগ করার কথা রয়েছে।
ভিওএ'র সোমালি সার্ভিস থেকে এই প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।