অন্যকে সহায়তা দিতে জীবনের ঝুঁকি নেন মানবিক কর্মীরা

ইরাকের বাগদাদে একটি বিস্ফোরণের পর, লোকজন ক্যানাল হোটেলের ধ্বংসাবশেষ পরিদর্শন করছেন; (ফাইল ফটো) ১৯ আগস্ট ২০০৩।

সংঘাত, প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত লাখ লাখ মানুষকে সাহায্য করার জন্য প্রতিদিন জীবন বাজি রেখে কাজ করছেন হাজার হাজার ত্রাণকর্মী। আর এমন এক সময়েই, ত্রানকর্মীদের ঝুঁকিকে স্মরণে রেখে এ বছর বিশ্ব মানবিক দিবস পালন করা হচ্ছে।

জাতিসংঘ বলছে, ২০ বছর আগের তুলনায় এখন ত্রাণ কর্মীরা অনেক বেশি বিপদের মধ্যে রয়েছেন। ২০ বছর আগে, ইরাকের বাগদাদের ক্যানাল হোটেলে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে বোমা হামলা হয়। সেই ঘটনায় নিহত হন ২২ জন। নিহতদের মধ্যে ছিলেন বিশেষ প্রতিনিধি সার্জিও ভিয়েরা ডি মেলো। ঐ ঘটনায় আহত হয়েছিলেন আরো ১৫০ জন।

জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয় দপ্তর (ওসিএইচএ) বলছে, এ বছর এখন পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে চলা সংকটে ৬২ জন মানবিক কর্মী নিহত হয়েছেন। এ সংখ্যা ২০২২ সালের একই সময়ের তুলনায় ৪০ শতাংশ বেশি। এছাড়া, এ বছর আরো ৮৪ জন ত্রাণকর্মী আহত হয়েছেন;অপহৃত হয়েছেন ৩৪ জন।

জেনেভায় ওসিএইচএ দপ্তরের প্রধান রমেশ রাজাসিংহম বলেন, “এই পরিসংখ্যান ভয়াবহ। প্রতি বছর, সেই কালো দিবসে বাগদাদে নিহতদের সংখ্যার চেয়ে প্রায় ছয় গুণ বেশি ত্রাণকর্মী দায়িত্ব পালনের সময় নিহত হচ্ছেন।“

তিনি আরো বলেন, ”এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক আইন স্পষ্ট। সাহায্য কর্মীরা লক্ষ্যবস্তু হতে পারেন না। অপরাধীদের অবশ্যই জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। এই সব অপরাধের দায়মুক্তি আমাদের যৌথ বিবেকের ওপর এক ক্ষতচিহ্ন।

ওসিএইচএ বলছে, ত্রাণকর্মীদের ওপর সবচেয়ে বেশি হামলা হয়েছে দক্ষিণ সুদানে। এর পর রয়েছে সুদান। এছাড়া, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক, মালি, সোমালিয়া এবং ইউক্রেনেও ত্রাণকর্মী হতাহতের ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে।

২০ বছর আগে ২০০৩ সালের ১৯ আগস্ট ইরাকে ত্রাণ কর্মীদের ওপর হামলার স্মরণে বিশ্ব মানবিক দিবস পালন করা শুরু হয়। । মানবিক সেবায় প্রাণ হারানো ত্রাণ কর্মীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে শুক্রবার জেনেভায় জাতিসংঘ সদর দপ্তরে এক অনুষ্ঠানে যোগ দেন, জাতিসংঘের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা, কূটনীতিক ও সাধারণ মানুষ-সহ জীবিত ও নিহতদের পরিবারের সদস্যরা।