স্লোভাকিয়ায় পার্লামেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন, সাবেক জনপ্রিয়তাবাদী (পপুলিস্ট) প্রধানমন্ত্রী এবং তার বামপন্থী দল। প্রায় চূড়ান্ত হয়ে যাওয়া ফল বলছে, রুশপন্থী ও যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী বার্তাসমৃদ্ধ রাজনৈতিক প্রচারণার মাধ্যমে তিনি ক্ষমতার মঞ্চে প্রত্যাবর্তন করতে যাচ্ছেন।
স্লোভাক পরিসংখ্যান অফিস থেকে রবিবার ভোরে পাওয়া তথ্য মতে, প্রায় ৬,০০০ ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ৯৯ দশমিক ২ শতাংশ ভোট কেন্দ্র থেকে ফলাফল পাওয়া গেছে। এই ফল থেকে দেখা যায়, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকো এবং বামপন্থী স্মার বা ডিরেকশন পার্টি ২৩ দশমিক ৩ শতাংশ ভোট পেয়ে এগিয়ে রয়েছে।
রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে; প্রতিবেশী ইউক্রেনের জন্য, পূর্ব ইউরোপের ছোট দেশটির শনিবারের নির্বাচন ছিলো একটি পরীক্ষা। ফিকোর জয়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং নেটোর মধ্যে বিরাজিত ভঙ্গুর সম্পর্কের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। ৫৯ বছর বয়সী ফিকো অঙ্গীকার করেছেন, তিনি যদি ক্ষমতায় ফিরে আসতে পারেন, তবে, রাশিয়ার যুদ্ধে ইউক্রেনের প্রতি স্লোভাকিয়ার সামরিক সমর্থন প্রত্যাহার করবেন।
চেকোস্লোভাকিয়া ভেঙে যাওয়ার পর, ১৯৯৩ সালে ৫৫ লাখ জনসংখ্যা নিয়ে সৃষ্টি হয় স্লোভাকিয়া। ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া হামলা শুরু করার পর থেকে, দেশটি ইউক্রেনের বলিষ্ঠ সমর্থক হিসেবে আবির্ভূত হয়। দেশটি, যুদ্ধের কারণে ইউক্রেন ছেড়ে যাওয়া শরণার্থীদের জন্য সীমান্ত খুলে দেয় এবং কিয়েভকে অস্ত্র সহায়তা প্রদান করে।
কোনো দলই সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন না পেলে, জোট সরকার গঠনের প্রয়োজন হবে। ঐতিহ্যগতভাবে, দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী দলকে সরকার গঠনের জন্য আমন্ত্রণ জানান। এ কারণে, ফিকো আবার প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন, এই সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি ২০০৬ থেকে ২০১০ এবং ২০১২ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন।
উদারপন্থী, পশ্চিমপন্থী নবাগত, প্রগ্রেসিভ স্লোভাকিয়া পার্টি ১৭ শতাংশ ভোট পেয়ে, অনেকটা পিছিয়ে, দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করছে। স্মার পার্টতে, ফিকোর সাবেক ডেপুটি পিটার পেলেগ্রিনির নেতৃত্বাধীন বামপন্থী হ্লাস (ভয়েস) পার্টি ১৫ শতাংশ ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে। ২০২০ সালের নির্বাচনে স্মার হেরে যাওয়ার পর, পেলেগ্রিনি ফিকোর দল থেকে আলাদা হয়ে যান। তবে, তাদের সম্ভাব্য পুনর্মিলন, সরকার গঠনে ফিকোর সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলছে।
ফিকো রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরোপিত ইইউর নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করেন। প্রশ্ন তোলেন, ইউক্রেন আদৌ তাদের বিরুদ্ধে আগ্রাসন চালানো রুশ বাহিনীকে নিজ ভূখণ্ড থেকে বিতাড়ন করতে পারবে কী না। আর, ইউক্রেনের নেটোতে যোগদানের বিষয়েও বিরোধিতা করেন তিনি।
ফিকোর প্রস্তাব হলো; ইউক্রেনে অস্ত্র পাঠানোর বদলে, ইইউ এবং যুক্তরাষ্ট্র তাদের প্রভাব ব্যবহার করে একটি সমঝোতামূলক শান্তি চুক্তি সম্পাদনে রাশিয়াকে বাধ্য করতে পারে।