ব্রিটেনের রাজা চার্লস মঙ্গলবার বলেন, ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে কেনিয়ার স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় পূর্ব আফ্রিকার এই দেশের জনগণের বিরুদ্ধে যেসব “নিন্দনীয় ও অন্যায্য সহিংসতা” দেখানো হয়েছে, সেগুলোর পক্ষে “সাফাই গাওয়ার কোনো অজুহাত নেই”।
চার্লস ও রানী ক্যামিলা ৪ দিনের সফরে কেনিয়া গেছেন। সফরের শুরুতে নাইরোবিতে আয়োজিত এক ভোজসভায় যোগ দিয়ে এ বিষয়টি স্বীকার করে নেন ব্রিটেনের রাজা। ১২ ডিসেম্বর কেনিয়ার স্বাধীনতা অর্জনের ৬০তম বার্ষিকীকে সামনে রেখে এই সফরের আয়োজন করা হয়েছে।
১৯৫২ থেকে ১৯৬০ সালের মাঝে মাউ মাউ আন্দোলনের সময় ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষের হাতে ১০ হাজারেরও বেশি কেনীয় নাগরিক নিহত হন। অন্যান্যদের গ্রেপ্তার, আটক ও নির্যাতনের মাধ্যমে সার্বিকভাবে এই আন্দোলনকে নির্মমভাবে দমিয়ে রাখা হয়।
চার্লস এই অনুষ্ঠানে আগতদের বলেন,“অতীতের অন্যায়গুলো সবচেয়ে বড় দুঃখ ও গভীর অনুশোচনার কারণ।” তিনি বলেন,“সততা ও খোলা মনে অতীতকে স্বীকার করে নিয়ে” দুই দেশ “আগামী বছরগুলোতে আরও ঘনিষ্ঠ বন্ধন গড়ে তুলতে পারে।”
তবে কিছু কেনীয় অধিকারকর্মীর দাবি অনুযায়ী নৃশংসতার জন্য পূর্ণাঙ্গ ক্ষমা চাননি রাজা।
এ ভোজসভায় আতিথেয়তা প্রদানকারী কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুতো জানান, “আফ্রিকার স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতিক্রিয়া ছিল দানবীয় ভাবে নিষ্ঠুর”। রুতো স্বীকার করেন, ব্রিটেন কেনীয়দের “হত্যা ও আহত করা এবং তাদের দুর্ভোগের কারণ হওয়ার জন্য অনুশোচনা” দেখালেও “সম্পূর্ণ ক্ষতিপূরণ দিতে (তাদের) এখনো অনেক কিছু করতে হবে।”
২০১৩ সালে আন্দোলনের সময় ক্ষতির শিকার হওয়া ৫ হাজার কেনিয়াবাসীকে ব্রিটেন ২ কোটি ৪০ লাখ ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে সম্মত হয়।
গত বছর রাণী এলিজাবেথের মৃত্যুর পর ব্রিটেনের রাজা হন চার্লস। কেনিয়া সফর হচ্ছে ৫৬ সদস্যের কমনওয়েলথ জোটের দেশে চার্লসের প্রথম সফর। এই জোটের বেশিরভাগ সদস্য রাষ্ট্রই ব্রিটেনের সাবেক উপনিবেশ। ১৯৫২ সালে রাজা পঞ্চম জর্জ মারা গেলে তার মেয়ে রাণী এলিজাবেথের ঐতিহাসিক ৭০ বছরের শাসনামল শুরু হয়। তৎকালীন রাজকন্যা এলিজাবেথ সেসময় তার স্বামী বর্তমানে প্রয়াত প্রিন্স ফিলিপের সঙ্গে কেনিয়া সফর করছিলেন।
এই প্রতিবেদনের কিছু তথ্য এপি, রয়টার্স ও এএফপি থেকে নেওয়া হয়েছে।