তুরস্ক ও গ্রীসের নেতারা দীর্ঘদিনের টানাপোড়েনের পর সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে সহমত

গ্রীক প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিটসোটাকিসের (ডানে) এবং তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেজেপ তাইয়েপ এরদোয়ান যৌথ ঘোষণা স্বাক্ষরের পর হাসিমুখে দাঁড়িয়ে আছেন। এথেন্সের ম্যাক্সিমোস ম্যানশন, ৭ ডিসেম্বর ২০২৩ ।( রয়টার্সের মাধ্যেম গ্রীক প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে প্রাপ্ত)

গ্রীস ও তুরস্ক পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করতে বৃহস্পতিবার তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি অর্জন করেছে। অনেক বছর ধরে চলে আসা উত্তেজনা নিরসনে দুই প্রতিবেশী দেশের নেতারা অনেকগুলি সহযোগিতামূলক পদক্ষেপের ব্যাপারে সহমত হয়েছেন।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেজেপ তাইয়েপ এরদোয়ান গ্রীসের রাজধানী এথেন্ন্সে যান যেখানে তিনি গ্রীক প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিটসোটাকিসের সঙ্গে বৈঠক করেন। দু জনই ভাল প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্কের উপর জোর দিয়ে অনেকগুলো ব্যাপারে সমঝোতায় পৌঁছেছেন। পারস্পরিক যোগাযোগ খুলে দেয়া , সামরিক ব্যাপারে আস্থা স্থাপন করে উত্তেজনা হ্রাস করা, বানিজ্য বৃদ্ধি করা এবং এজিয়ান সাগর সম্পর্কিত সমস্যা নিরসনে কাজ করে যাওয়া। ঐ সাগরে এই দুটি দেশের অভিন্ন সীমান্ত রয়েছে।

এরদোয়ান বলেন, “ আমাদের মধ্যে এমন কোন সমস্যা নেই যার সমাধান করা যাবে না যদি আমরা তাদের মতো আচরণ না করি যারা সমুদ্র পেরিয়ে নদীতে ডুবে যায় , যদি আমরা বড় দাগের বিষয়গুলোর উপর জোর দেই। আমরা এজিয়ানকে শান্তির সমুদ্রে পরিণত করতে চাই । তুরস্ক ও গ্রীস হিসেবে আমরা যৌথ পদক্ষেপ নেবো, আমরা বিশ্বের সামনে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকতে চাই।

দেশ দু’টির মধ্যে দ্বিমতের বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে নৌ সীমা এবং এজিয়ান সাগর ও ভূমধ্যসাগরের পূর্বাঞ্চলে সম্পদ সন্ধানের অধিকার। গত ৫০ বছরে তিন বার এই দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা প্রায় যুদ্ধের দিকে নিয়ে যাচ্ছিল।

অতি সম্প্রতি এই ২০২০ সালে ভূমধ্যসাগরের পূর্বাঞ্চলে দুটি দেশের যুদ্ধ জাহাজ পরস্পরকে অনুসরণ করে।

গত বছরও এরদোয়ান বলেছিলেন যে মিটসোটাকিসের সঙ্গে দেখা করার কোন ইচ্ছে তাঁর নেই। কিন্তু এ বছর এই দুই নেতা তিন বার পরস্পরের সঙ্গে দেখা করেছেন এবং বৃহস্পতিবারের বৈঠকে এই দুই নেতা বাগাড়ম্বর থেকে স্পষ্টতই বেরিয়ে এসেছেন।

মিটসোটাকিস এই সেরে ওঠা সম্পর্কের প্রশংসা করেন এবং দুটি দেশের মধ্যে বানিজ্য ৫৪০ কোটি ডলার থেকে বৃদ্ধি করে আগামি পাঁচ বছরে ১ হাজার ৮০ কোটি ডলারে উন্নীত করার “বাস্তবমুখী লক্ষ্য” নির্ধারণ করেন।

গ্রীক নেতা আরও বলেন তিনি তুরস্কের নাগরিকদের জন্য গ্রীস সফরে ছুটিকালীন ভিসা প্রদানকে সমর্থন করবেন এবং তুরস্কের যে সব নাগরিক ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলিতে ভ্রমণ করতে চায় তাদের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা শিথিল করবেন।

গ্রীসের সঙ্গে উন্নত সম্পর্ক হচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের দিকে একটি পদক্ষেপ। তুরস্ক প্রায় দুই দশক ধরে ইউরোপীয় ইউনিয়নে যুক্ত হবার চেষ্টা করছে। মে মাসে এরদোয়ান নির্বাচনে আবার জয়লাভের পর থেকে পশ্চিমি মিত্রদের সঙ্গে সহযোগিতা বৃদ্ধিকে তার অগ্রাধিকার হিসেবে গণ্য করছেন।

এই প্রতিবেদনের কিছু তথ্য নেয়া হয়েছে এপি ও রয়টার্স থেকে।