গাজায় আগামী সপ্তাহে যুদ্ধবিরতির আশা করছেন বাইডেন

উত্তর গাজার বেইট লাহিয়াতে ইসরাইলি হামলায় ধ্বংস হওয়া ভবনগুলির পাশ দিয়ে গাধা-টানা গাড়ি যাচ্ছে ৷( ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪)

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আগামী সপ্তাহের শুরু নাগাদ গাজায় যুদ্ধবিরতির একটি আশা দেখতে পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। নভেম্বরের পর এই প্রথম একটি যুদ্ধবিরতির জন্য বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি কাজ করে যাচ্ছে।

বাইডেন নিউইয়র্কে সাংবাদিকদের বলেন,“আমার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা আমাকে জানিয়েছেন, আমরা বিষয়টির অনেকটাই কাছাকাছি আছি। তবে চূড়ান্ত হয়নি। আশা করছি, আগামী সোমবারের মধ্যেই এই বিষয়টির নিস্পত্তি ঘটবে,যুদ্ধবিরতি হবে।”

আলোচকরা ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে কাজ করছেন। এই চুক্তিতে গাজায় হামাসের হাতে জিম্মি ইসরাইলি বন্দীদের মুক্তির সাথে সাথে ইসরাইলে আটক ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তির ব্যাপারটি অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

তাছাড়া গাজায় মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে জড়িত শতাধিক পরিবহন ট্রাকের চলাচলের ব্যাপারটিও চুক্তির মধ্যে থাকবে।

যদিও ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, সাময়িক যুদ্ধবিরতি হলেও ইসরাইল হামাসকে চূড়ান্তভাবে ধ্বংসের পরিকল্পনা থেকে পিছপা হবে না। তারা দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফা শহরে আক্রমণ চালানোর পরিকল্পনায় কোন পরিবর্তন আনবে না।

রাফায় যারা বসবাস করছেন তাদের অধিকাংশই ইতিমধ্যে গাজার অন্যান্য অংশ থেকে পালিয়ে সেখানে আশ্রয় নিয়েছে। নতুন করে সেখানে আক্রমণের আশংকা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে শংকা তৈরি করেছে।

মঙ্গলবার সম্প্রচারিত এনবিসি-র "লেট নাইট উইথ সেথ মেয়ার্স" অনুষ্ঠানে বাইডেন বলেন যে রাফায় আক্রমণের গতি কমিয়ে দিয়েছে ইসরাইল। সেখানে অভিযান চালানো এবং অবশিষ্ট হামাস সদস্যদের নিশ্চিহ্ন করা আগে শহরের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ মানুষকে যাতে সরিয়ে নেয়া যায়, তারা সেটা দেখবে ।

যদিও নেতানিয়াহু তার সোমবারের বিবৃতিতে রাফা আক্রমণের আগে ফিলিস্তিনিদের কোথায় পাঠানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কিছু বলেননি। এদিকে, মিশর তাদের সীমান্ত খুলবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে।

৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইসরাইলে ১২০০ জন নিহত হলে ইসরাইলের পাল্টা আক্রমণ শুরু করে। তাদের পালটা আক্রমণে, হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুসারে, গাজায় প্রায় ৩০ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। তাছাড়া, ইসরাইলের এই অভিযানে ৭০ হাজার ২০০ জনেরও বেশি লোক আহত হয়েছে। ইসরাইলের দাবী, তারা ১২ হাজার হামাস যোদ্ধাকে হত্যা করেছে।

যুক্তরাষ্ট্র ১৯৯৭ সালে হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে। ইসরাইল, মিশর, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাপানও হামাসকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে।

প্রতিবেদনের কিছু তথ্য এপি, এএফপি এবং রয়টার্স থেকে নেওয়া হয়েছে।