জাতিসংঘ আফগানিস্তানের তালিবান কর্তৃপক্ষকে শুক্রবার সতর্ক করেছে, শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে নারীদের উপর তাদের নিষেধাজ্ঞার ফলে দেশটি গভীরতর দারিদ্র্য ও আন্তর্জাতিক ভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার ঝুঁকির দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
আফগানিস্তানে জাতিসংঘের সহায়তা মিশন বা ইউএনএএমএ-র প্রধান যাবতীয় নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে মৌলবাদী শাসককে পুনরায় আহ্বান জানিয়েছে কেননা নারীদের জন্য বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তাকে তুলে ধরতে গোটা বিশ্ব আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করেছে।
রোজা ওতুনবায়েভা বলেন, “হৃদয়বিদারক বিষয় হল এই যে, আমরা আফগানিস্তানে ঠিক এর উল্টোটা দেখছি। নারীদের উপর মারাত্মক ও ইচ্ছাকৃতভাবে বিনিয়োগ না করার ফলে নারী ও মেয়েদের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে এবং টেকসই শান্তি ও সমৃদ্ধির পথে শুধু বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে।”
২০২১ সালের আগস্ট মাসে ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার পর থেকে তালিবান মেয়েদের মাধ্যমিক স্কুলশিক্ষা ও উচ্চশিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করেছে। বাড়ির বাইরে নারীদের চলাফেরার স্বাধীনতাকে সীমাবদ্ধ করা হয়েছে এবং জাতিসংঘ ও অন্যান্য সহায়তা গোষ্ঠীসহ সরকারি ও বেসরকারি কর্মক্ষেত্র থেকে অধিকাংশ নারীকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচি বা ইউএনডিপি বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, আফগানদের প্রায় ৭০ শতাংশের যথেষ্ট প্রাথমিক সহায়-সম্পদ নেই এবং নারীদের উপর বিধিনিষেধের ফলে মৌলিক অধিকার ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি ব্যাহত হচ্ছে।
এশিয়া ও প্যাসিফিক বিষয়ক ইউএনডিপির অধিকর্তা কান্নি উইগনারাজা নিউ ইয়র্কে সংবাদদাতাদের বলেন, “সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হল মেয়েদের শিক্ষাকে নিষিদ্ধ করে অব্যাহত নির্দেশ। ষষ্ঠ শ্রেণির পর এগোতে না পারা একটা বড় বাধা।”
উইগনারাজা সম্প্রতি আফগানিস্তান সফর থেকে ফিরেছেন। তিনি বলেন, “গত বছর, কোনও মেয়ে দ্বাদশ শ্রেণি উত্তীর্ণ হয়নি। ফলত, তাহলে তারা কীভাবে ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে লাফ দিয়ে কারিগরিবিদ্যার কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে যাবে?”
নারী ত্রাণ কর্মীদের উপর নিষেধাজ্ঞার ফলে সে দেশে ত্রাণ সংক্রান্ত কর্মকাণ্ড ব্যাহত হয়েছে। জাতিসংঘের অনুমান, সে দেশে ১ কোটি ২০ লক্ষেরও বেশি নারীর চলতি বছরে মানবিক সহায়তা দরকার হবে।
জাতিসংঘ তালিবানকে ডি-ফ্যাক্টো কর্তৃপক্ষ হিসেবে বিবেচনা করে কারণ কাবুলে তাদের সরকারকে কোনও দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়নি।
আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলে কান্দাহার শহর থেকে সরকার পরিচালনা করেন আখুন্দজাদা। তিনি তার নীতিমালাকে সমর্থন করেন এবং সেগুলি পরিবর্তন করতে আন্তর্জাতিক আহ্বানকে আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ বলে নাকচ করে দিয়েছেন।